আমরা নিজস্ব অর্থনীতির ওপর দাঁড়াতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
ই-বার্তা ডেস্ক।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা নিজস্ব অর্থনীতির ওপর দাঁড়াতে চাই। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষে বস্ত্রমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বস্ত্রপণ্যের ব্যবসায়ীদের যথাসাধ্য বার্গেনিং বা দর কষার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বস্ত্রপণ্য খুব অল্প টাকায় আমরা বিক্রি করি। পণ্যের দাম মাত্র ১ ডলার করে বাড়ালেও আমরা লাভবান হতে পারতাম। এখন আমাদের বার্গেনিং করা উচিত।
বৈদেশিক ক্রেতা ও বায়ারদের এ বিষয়ে আপনাদের বলা উচিত। যদিও প্রতিযোগিতার বাজার। তবুও বার্গেনিং করতে হবে। আমি নিজে যেসব দেশে যাই এ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলি। আমি নিজে একা বললে হবে না, আপনাদেরও বলা উচিত। তিনি বলেন, আমাদের তৈরি পোশাকশিল্প বিশ্ববাজারে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। বাজার ধরে রাখতে হলে কোন দেশে কোন ধরনের পোশাকের চাহিদা রয়েছে, তাদের পছন্দের রং কী, কোন সিজনে কোন পোশাক তারা পরে, কোন ডিজাইন কোন দেশের মানুষের পছন্দ, এগুলো খুঁজে বের করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু পোশাক শিল্প নয়, অন্যান্য শিল্পের সঙ্গেও যারা জড়িত আছেন, তারা সারা বিশ্বে বাজার খুঁজবেন। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা আছে, সে অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে বিদেশে রফতানি করবেন।
এ সময় তিনি বলেন, পাটসহ অন্যান্য বস্ত্র খাতের গুরুত্ব জানিয়ে বলেন, পাট এমন একটি কৃষিপণ্য যা পরিবেশবান্ধব। আমরা পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছি। এখন পাট দিয়ে বিভিন্ন পণ্যের পাশাপাশি বস্ত্র নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে। এর বিকাশে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তাঁত শিল্পও আমাদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। মসলিনের ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। এ নিয়ে নতুন করে গবেষণার কাজ শুরু করার প্রস্তুতি চলছে।
সরকার সিল্ক ও রেশমের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। রাজশাহীতে ১৯টি লুম চালু করা হয়েছে। বস্ত্রখাতের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় অনুষ্ঠানে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা পদক দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাল (শুক্রবার) মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন শুরু হবে। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষ পালন করব। এ ছাড়া আগামী বছরে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। ২০২১ থেকে ৪১ সাল পর্যন্ত আমরা একটা পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা তৈরি করেছি। এ ছাড়া বাংলাদেশ যেহেতু একটি বদ্বীপ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হই, সেজন্য ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ হাতে নিয়েছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ দেশের মানুষ যেন সুখে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে, সেই কর্মসূচি গ্রহণ করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম ও মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত বস্ত্রমেলা চলবে।