এসিড ব্যাটারি চালিত অবৈধ ভ্যানগাড়ির ব্যবসা করে কোটিপতি ইসরাফিল
ই-বার্তা ।। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সারাদেশে ৪০ লাখ এসিড ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এগুলো আমদানি ও ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন আদালত। হাইকোর্টের এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজধানী সহ সারাদেশে বেপরোয়াভাবে চলছে এই এসিড ব্যাটারি চালিত অবৈধ থ্রি হুইলার। থ্রি হুইলারগুলোর বড় একটি অংশ অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে চার্জ দেয়ায় সরকার ট্যাক্সই বঞ্চিত হচ্ছে। অপচয়ের পাশাপাশি নিয়মিত ভয়াবহ দুর্ঘটনাও ঘটছে।
রাজধানীতে বিভিন্ন এলাকায় একাধিক সিন্ডিকেট এসিড ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলার দিয়ে অবৈধ এ ব্যবসা করে বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনুসন্ধান করে জানা যায়, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, পুরান ঢাকা ও হাজারীবাগ এলাকায় এই সিন্ডিকেটটির রয়েছে অবৈধ এ ব্যবসার শক্ত ঘাঁটি। এই এলাকায় অবৈধ এ ব্যবসার সিন্ডিকেট প্রধান ইসরাফিল। সে আগে ভ্যানগাড়ি চালাত। সবাই তাকে ভ্যান ইসরাফিল নামে জানে। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে চারশত ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়ি প্রতিদিন চার্জ দিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘ দিন যাবত ব্যাবসা করে আসছে।
কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, পুরান ঢাকা ও হাজারীবাগ এলাকার স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা বলছে, ট্রাফিক পুলিশ, ভুয়া সাংবাদিক ও কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে শক্তিশালী এই সিন্ডিকেট অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছে। কামরাঙ্গীরচরের সেকশন ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়কে ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়ি সবচেয়ে বেশি।একজন ভ্যানগাড়ি চালক বলেন, গাড়ি প্রতি ২-৩ হাজার টাকা করে আদায় করেন ভ্যান ইসরাফিল। এতে তার বছরে আয় প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। তবে এই টাকার ভাগ ট্রাফিক পুলিশ, ভুয়া সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতারাও পেয়ে থাকে।
কামরাঙ্গীরচরের রফিকুল ইসলাম বলেন, ভ্যান ইসরাফিলের বাসা কামরাঙ্গীরে। ‘কিছুদিন আগেও ইসরাফিল নিজেই একজন ভ্যানগাড়ি চালক ছিলেন। কিন্তু এখন সে কোটিপতি। ভ্যান ইসরাফিল এখন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বড় বড় পুলিশ অফিসাররা হ্যার লোক’। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইসরাফিলের ব্যবহৃত মোবাইলে কল করলে রং নাম্বার বলে কেটে দেন।
জানা যায়, পুলিশ মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও, ইসরাফিলের ভ্যানগাড়ি ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। যেসব ভ্যানগাড়ি চালক ইসরাফিলকে চাঁদা দেয় না, তাদের গাড়ি ডাম্পিং করে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এ,টি,এস,আই এবং সার্জেন্ট জানান, ইসরাফিলের ভ্যান ধরা হলে বিভিন্ন মহলের হুমকির শিকার হতে হয়। কাউকে কাউকে বদলির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ইসরাফিলের সম্পর্কে লালবাগ ট্রাফিক পুলিশের টিআই বুলবুল আহমেদ বলেন, ইসরাফিলের কাছ থেকে একটি পয়সাও নেয় না পুলিশ। বরং রেকারিং করতে করতে ইসরাফিলের গাড়ির সংখ্যা এখন ৩০-৩৫ টিতে নেমে এসেছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, একদল অসাধু সাংবাদিক ইসরাফিলের মতো অবৈধ বহু যানবাহনের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। পয়সা খেয়ে তারা পুলিশের সঙ্গে দেন দরবারের চেষ্টা করে। অনেক সময় সন্মানের দিক চেয়ে মেনে নিতে হয়। তবে এখন কারও সুপারিশ শোনা হয় না বলে জানান বুলবুল আহমেদ।
টি আই বিকাশ (সোয়ারীঘাট) ইসরাফিলের সম্পর্কে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি ধমকের সুরে কথা বলেন। ট্রাফিক পুলিশের আর একজন কর্মকর্তা টি আই মঞ্জুর(বাবুবাজার) ইসরাফিলকে চেনেন না বলে দাবী করেন।
ই-বার্তা/এস.এম জাকারিয়া হোসেন