চলন্ত বাসে নার্সকে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার চালক-হেলপারের
ই-বার্তা ডেস্ক।। কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যায় জড়িত সন্দেহে রিমান্ডে থাকা ব্যক্তিরা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে শুরু করেছে।
রিমান্ডে স্বর্ণলতা বাসের ড্রাইভার নূরুজ্জামান ও হেলপার লালন মিয়া পুলিশকে ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের কথামতো স্বর্ণলতা পরিবহনের যে বাসটিতে ঘটনা ঘটে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৪২৭৪) তা গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার টোক এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাসটির তিন জায়গায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ পাওয়া গেছে।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চলন্ত বাসের দরজা জানালা লাগিয়ে শাহীনুরকে ধর্ষণ করে তারা। হেলপারকে গাড়ি চালাতে দিয়ে প্রথমে ড্রাইভার নূরুজ্জামান তাকে ধর্ষণ করে। এরপর হেলপার লালনসহ আরো দু’জন ধর্ষণ করে। পরে মাথার খুলি ফাটিয়ে দিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয় তারা।
তদন্তকারীরা বলছেন, ধর্ষণ ও হত্যার পর ধর্ষণকারীরা বিষয়টি সড়ক দুর্ঘটনা প্রমাণ করতে নাটক সাজিয়েছিল। ধর্ষণের পর শাহীনুরকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়ার পর ধর্ষকরা নিজেরাই আবার ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে অনেক স্থানীয় মানুষও এগিয়ে আসে। কিন্তু ধর্ষকরা স্থানীয়দের জানিয়েছিল এয়ারফোনে গান শুনতে শুনতে মেয়েটি বাস থেকে পড়ে গেছে, আমরাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। তাদের কথা বিশ্বাসও করেছিল স্থানীয়রা।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ‘তদন্ত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। আমরা একেবারেই নিশ্চিত যে শাহীনুরকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।’
বাসের চালক নূরুজ্জামান নূরু (৩৯) ও হেলপার লালন মিয়াসহ (৩২) মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার তাদের আট দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এদিকে আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি। নিহত শাহীনুরের বড় ভাই শফিকুল ইসলাম সুজন জানান, শাহীনুরের বেতনের টাকা, গলার চেইন ও এনড্রয়েড মোবাইল ফোনটি এখনো পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।
এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল শনিবারও জেলার বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন হয়েছে। দুপুরে জেলা শহরের বিজয় চত্বরে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও মানবাধিকার নাট্য পরিষদ জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন হয়।
ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু