চাঁদ দেখার সংশোধিত সিদ্ধান্তে সারাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত
ই-বার্তা ডেস্ক ।। মঙ্গলবার বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আজ (বুধবার) মুসলমান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে বাংলাদেশে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে একথা জানান ।এর আগে সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি জানিয়েছিল দেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। তাই বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে বলে জানানো হয়।
জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির পক্ষ থেকে গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে কমিটির সাংবাদিকদের নতুন সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলা হয়, মঙ্গলবার দেশের কোথাও কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে এবং বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে।
চাঁদ দেখার সংশোধিত ঘোষণার বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার পর কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার শতাধিক ব্যক্তি চাঁদ দেখেছেন বলে খবর আসে। তখন ওই খবরের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। শরীয়ত মোতাবেক কোরআন হাদিসের আলোকে চাঁদ দেখার সংশোধিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা কমিটির যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় ওই সময় পর্যন্ত দেশের কোথাও চাঁদ দেখার তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু পরে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামসহ দেশের কয়েকটি স্থানে চাঁদ দেখা গেছে বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাই বুধবারই সারাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে বলে কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
আগের ঘোষণার ব্যাখ্যা দিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন মাগরিবের নামাজের পরে চাঁদ দেখা যাওয়ার কথা। সে মতে মাগরিবের নামাজ আদায় করার পর দেশের ৬৪ জেলায় আমাদের যে চাঁদ দেখা কমিটি আছে এবং সব জেলায় চাঁদ দেখা কমিটির মিটিং হয় এবং কোথাও যদি চাঁদ দেখা যায় তাহলে সরাসরি ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং আমাদের যে কমিটি আছে কমিটিকে জানানো হয়। কিন্তু এসব জেলা থেকে যখন যতক্ষণ পর্যন্ত চাঁদ দেখার খবর পাইনি আমরা খবর নেওয়ার চেষ্টা করেছি। শুধু আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নন; আমাদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার যে মুফতিগণ থাকেন তাদেরকেও বলেছি। আমাদের ওলামায়ে কেরামগণ তাদের তাদের মতো করে খোঁজখবর নিয়েছেন।’
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এরপর বিভিন্ন বড় বড় আলেমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যেমন চরমোনাই পীর সাহেব হুজুররা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, আমরাও যোগাযোগ করেছি। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় সমস্ত মুফতি বসে মিটিং করেছেন। তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম। আমি নিজে মাওলানা শফী আহমদের (হেফাজত আমির) সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন সেটা ছিল এ রকম- আমরা সারা দেশে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম, এখন পর্যন্ত ঈদের চাঁদ কোথাও দেখা যায় নাই।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উনার (আহমদ শফী) সাথে এবং সকল আলেম-ওলামাদের সাথে যোগাযোগ করে আমরা ঘোষণাটা দিয়েছিলাম এবং সব জায়গায় তারাবির নামাজ হবে এ ঘোষণাও দিয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবং পাটগ্রাম উপজেলার ইউএনও জানিয়েছেন সাতজন সরাসরি চাঁদ দেখার কথা তাদের জানিয়েছেন। শরীয়ত মোতাবেক দুজন ঈমানদার ব্যক্তি চাঁদ দেখার ঘোষণা দিলে শরীয়ত বলে সে ঘোষণা মেনে নেওয়া দরকার। অতএব কোনো ব্যক্তি স্বার্থে নয়, শরীয়ত মোতাবেক কোরআন এবং হাদিস অনুযায়ী যেটা কমিটির করা উচিত সেটাই আমরা আগে ঘোষণা দিয়েছিলাম। আর নতুন করে যে ঘোষণাটি দিচ্ছি সেটাও শরীয়ত মোতাবেক।’
ই-বার্তা/ জা হা