‘চিকিৎসা না দিয়ে খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারা হচ্ছে’
ই- বার্তা ডেস্ক।। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন যে, চিকিৎসা না দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে মারা হচ্ছে। জনগণ কিন্তু বসে থাকবে না। এর জবাব তারা দেবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তির অপেক্ষায় বসে আছে দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, নেত্রী অসুস্থ। মানবিক কারণে তিনি মুক্তি পেতে পারেন, চিকিৎসা পেতে পারেন। উনাকে চিকিৎসার জন্য তেমন সুযোগ দেয়া হচ্ছে না— যদিও বলা হচ্ছে তিনি চিকিৎসা পাচ্ছেন। জেলখানার ভেতরে এটা চিকিৎসা নয়। তিলে তিলে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। অন্যদিকে এই দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।
টিআইবির গবেষণার বরাত দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, তারেক রহমানকে অপরাধী প্রমাণ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ৪৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এতে আমার দুঃখ নাই। আমার দুঃখ হলো, এই টাকা পাইলেন কোথায়? কোন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বের হয়েছে? তার মানে আপনারা পুরো বিএনপিকে গ্রাস করার চেষ্টা করছেন।
সরকার বৈধ নয় অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, এ সরকার জনগণকে জনরায়কে ভয় পায়। এ কারণে অবৈধভাবে রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে পুলিশের সহায়তায় ক্ষমতায় এসেছে।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপির অন্যতম এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, সরকার সিলেট, ময়মনসিংহ ও রাজশাহীতে বিএনপির জনসভায় বাধা দিয়েছে। এত কিছুর পরও নেতাকর্মীরা হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। এটি আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক খবর।
বিএনপি নেতাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, এ সরকার আমাদের সব সময় আদালতের বারান্দায় ঘোরাচ্ছে। আমি রাজশাহী থেকে এসে বাসায় যেতে পারিনি। সঙ্গে সঙ্গে আদালতে যেতে হয়েছে। আজকে আমি অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি।
আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে এ দেশের মাটিও থাকবে না। আমি সাংবাদিকদের সাক্ষী রেখে বলতে চাই, এ দেশে একদিন আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারব না, এখনো পারি না বলতে, তারপরও বলছি, এরপর আর বলতে পারব না। আমাদের অবস্থা বিশ্বের অনেক মুসলমানদের চাইতেও খারাপ হয়ে যেতে পারে— এমন সম্ভাবনা আমি লক্ষ্য করছি।’
‘এই জন্যই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং চারিত্রিক যে অবক্ষয় ঘটেছে তার পরিবর্তন ঘটবে বাংলাদেশে’— বলেন মির্জা আব্বাস।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব
‘এই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না’— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের সূত্র ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই সরকারের লজ্জা নেই। এই সরকার রাতের অন্ধকারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। ত্রিশ তারিখের ভোট উনত্রিশ তারিখ রাতে হয়ে গেছে।’
‘টাকার হিসাব নেয়ার জন্য বিএনপিকেও ধরা হবে’— প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, গত ১২ বছর ধরে তো আমরা হিসাব দিচ্ছি। আদালত আর দুদকে প্যারেড করতে করতে জান শেষ। আমরা হিসাব দিতেই আছি। আপনাদেরটা তো দেন না। মাত্র দুজন টোকাই ধরেছেন। এই টোকাইয়ের পকেট থেকে যদি এত টাকা বের হয়, তাহলে আপনাদের বাঘা বাঘাদের পকেট থেকে কত বের হবে?’
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।