ছাত্রলীগ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য নয়: কাদের
ই- বার্তা ডেস্ক।। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে ওঠা ‘বিতর্কের’ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন ।
তিনি বলেন, আমি এ নিয়ে (ছাত্রলীগ) আর কোনো কথা বলব না। কারণ আমাদের সভাপতি দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি দেখছেন। এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশনের (কেইসি) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি একটা বিষয় বুঝি না, একটা ছাত্র সংগঠন নিয়ে এত লেখালেখি! আপনারা (সাংবাদিকরা) কি মনে করেন, দেশের অন্যান্য ইস্যুর তুলনায় ছাত্রলীগ ইস্যু এখন প্রাধান্য পায়?
রংপুর-৩ আসন আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেবে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রংপুরের আসনটি আসলে জোটের নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পার্টির ছিল, এরশাদ সাহেবের আসন মনোনীত। জোটগত সিট বণ্টনে এটা জাতীয় পার্টির ছিল। এখন জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের আসনে। এখন তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে এলে আসতে পারে, সেটা তাদের ব্যাপার।
তিনি আরও বলেন, আর যদি জোটগতভাবে আমাদের কাছে আসনটি চায়। তারা যদি বলে, এটা আমাদের দেয়া হোক। জোটে এ আসনটি আমাদের ছিল। তখন আমরা বিবেচনা করব। এ মুহূর্তে আমাদের প্রার্থী আছে। যতক্ষণ না আলোচনা হয়, ততক্ষণ কিছু বলা যাচ্ছে না। এ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তারাও কোনো আবেদন করেনি। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে মহাসড়কে টোল আদায় হলে তা সাধারণ মানুষের বাড়তি ভোগান্তির কারণ হবে কি না জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আগে যেতেন চার ঘণ্টায়, এখন যাচ্ছেন তিন ঘণ্টায়, সময় বাঁচবে- এখানে লসের কোনো কারণ নেই। আর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হল, এটা চুক্তি পর্যন্ত গড়াতে অনেক সময় লাগবে। এখনও টোলের বিষয়টি নির্ধারণই হয়নি।
কাজেই এটা ডাবল কি ট্রিপল হবে, কী করে এটা অনুমান করব। টোল নির্ধারণের প্রাথমিক কোনো আলাপ-আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। কাজেই এ নিয়ে আগাম মন্তব্যের কোনো কারণ নেই।
মহাসড়কে টোল নিয়ে বিএনপির অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মহাসড়ক করার কোনো অভিজ্ঞতা তো বিএনপির নেই। যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন চার লেনের কোনো রাস্তাই ছিল না।
পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল- এসব তারা স্বপ্নেও দেখেনি। এ দেশে সড়ক অবকাঠামোর যে উন্নয়ন হয়েছে, এ বিষয়ে তাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। অন্য দেশে যে টোল আদায় হয়, এটা তারা জেনেও না জানার ভান ধরছে। রাস্তা করতে হলে তো রাস্তা ব্যবহার উপযোগী রাখতে হয়, রাস্তার তো মেনটেইনেন্স আছে।
বিএনপির আন্দোলনের হুমকির জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলনে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগ আন্দোলনকে মোকাবেলা করেই ক্ষমতায় এসেছে। আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে করলে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা করলে সমোচিত জবাব দেয়া হবে।
আসামের বিষয়ে সরকারের কোনো উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা ভারত সরকারের কাছে যখন তাদের মন্তব্য জানতে চাই, তারা আসলে কী করতে চায়। তখন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় বলে গেছেন, ওখান থেকে আমরা যেটা পেলাম, এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তবে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। তিনি বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে ভারতের কে কী বক্তব্য দিল, সেটা বিবেচ্য নয়। ভারত সরকার আমাদের কী বলেছে, সেটাই বিবেচ্য বিষয়। বিষয়টা এখনও অপিলের পর্যায়ে আছে। আরও চার মাসের মতো সময় লাগবে। এটা নিয়ে শেষ কথা বলার মতো সময় এখনও আসেনি।
এর আগে সেতু ভবন মিলনায়তনে পদ্মা বহুমুখী সেতুর পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান কেইসি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে পরিচালক (প্রশাসন) মো. রেজাউল হায়দার কেইসি’র পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিন ইয়ং সুক স্বাক্ষর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদাউস, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন খান প্রমুখ।