টাকা ছাড়া মর্গ থেকে লাশ বের হয় না
ই-বার্তা ডেস্ক।। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মর্গে বিনা টাকায় ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা। পাশাপাশি মর্গ থেকে লাশ হস্তান্তরের সময়েই পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের একটি কপি তুলে দিতে হবে।
সে অনুযায়ী মর্গেই লেখার কথা প্রতিবেদনটি। অবশ্য বাস্তবতার নিরিখে সরকারি নির্দেশনায় সে সময়টা বৃদ্ধি করে ২৪ ঘণ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মর্গে অনুসন্ধান করে জানা গেল, টাকা ছাড়া মর্গ থেকে লাশ বের হয় না। ময়নাতদন্তে নানা খাত দেখিয়ে নিহতের স্বজনের কাছ থেকে দুই হাজার থেকে শুরু করে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। এজন্য কোনো রশিদ বা বৈধ কাগজও দেওয়া হয় না। অনুসন্ধানে এও দেখা গেল, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার বিধিটা পিআরবি আর সরকারি নির্দেশনাতেই আটকে আছে। কোনো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনই নির্ধারিত সময়ে দেওয়া হয় না। ঘণ্টা পার হয়ে দিন, মাস আর বছর চলে গেলেও বেশিরভাগ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায় না। মাসের পর মাস মর্গে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আটকে থাকার আড়ালেও বিভিন্ন মর্গ অফিসে টাকার খেলার তথ্য পাওয়া গেছে।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত আলোচিত হত্যাকাণ্ড বা হত্যাকাণ্ড বোঝা যায়- এমন ঘটনাগুলোর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দ্রুতই পাওয়া যায়। কিন্তু আত্মহত্যা বা অজ্ঞাতপরিচয়ে উদ্ধার লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন মাস থেকে বছর পার হলেও তা আর তৈরি হয় না।
সংশ্নিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরির বিলম্বের কারণে বদলে ফেলা হতে পারে মৃত্যুর আসল কারণ।
পুলিশের সাবেক আইজি মো. নূরুল আনোয়ার বলেন, পিআরবি বিধি অনুযায়ী ময়নাতদন্ত শেষে লাশের সঙ্গে পুলিশ সদস্য বা কনস্টেবলের কাছে হস্তান্তর করা কার্বন কপিটিই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, তারা গবেষণা করে ময়নাতদন্তের ভুলের নানা কারণ দেখিয়েছেন।
গত জানুয়ারি মাসের পরিসংখ্যান তুলে ধরে পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানায়, সারাদেশে এক মাসের বেশি সময় ধরে এক হাজার ১১৮টি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আটকে আছে।
ই-বার্তা/ আরমান হোসেন পার্থ