নবম শ্রেণির ছাত্রীকে নগ্ন করে মারধরের অভিযোগ!
ই-বার্তা ।। জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে নগ্ন করে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে রাস্তার উপর শুইয়ে ‘শাস্তি’ দেয়া হয়েছে! অথচ তাকে যে কারণে এই শাস্তি দেয়া তাতে করে তার বিন্দু পরিমাণ কোনো দোষ নেই। এই জঘন্য শাস্তি দেয়ার কারণটি হলো- প্রতিবেশীর ফসলের ক্ষেতে বাছুর ঢুকে পড়ার জেরে তার সঙ্গে এমন অশালীন কাজটি করা হয়েছে।
ভারতের জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে ঘটেছে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে অপদস্থ করা হলেও এখনো পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করেনি পুলিশ। ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনার পরে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
কোনো তৎপরতা না দেখে ওই ছাত্রীর পরিবার পরে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে অভিযোগ করেন। এই ঘটনার পর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ওই ছাত্রী। সে স্কুলে যেতে চাইছে না, প্রাইভেট পড়তেও যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
নির্যাতিতা ওই ছাত্রীর পরিবারের দাবি, তারা বিজেপির সমর্থক। হামলাকারীরা তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, কোন ধারায় মামলা হয়েছে, এতোদিন কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সব যাচাই করা হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপারের কথায়, কেউ যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধী তার শাস্তি পাবেই।
জানা যায়, ময়নাগুড়ির একটি গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীদের বাড়ির পোষা বাছুর প্রতিবেশীর খেতে ঢুকে যায়। নিজেদের বাড়ির বাছুর ফিরিয়ে আনতে ছাত্রীটি প্রতিবেশীর বাড়ি যায়। আর সেখানে যাওয়ার পর কথা কাটাকাটি হওয়ার পরে ওই পরিবারের সদস্যরা ছাত্রীকে মারতে মারতে রাস্তায় নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
এরপরে ওই ছাত্রীর জামাকাপড় ছিঁড়ে-ফেলে রাস্তার উপর রেখে দেয়া হয় বলে দাবি জানান ছাত্রীর পরিবার।
এ ঘটনার পর ওই ছাত্রীর মা বলেন, ১৪ বছর বয়সী মেয়েটি এ ঘটনার পর থেকে সব সময় আতঙ্কে থাকে।
তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে তখন লজ্জা ঢাকতে উপুড় হয়ে রাস্তায় শুয়ে ছিল। একটা মোটা দড়ি নিয়ে ওর গলায় পেঁচিয়ে টেনে তোলার চেষ্টা হয়। নগ্ন করে পাড়ায় ঘোরানোর হুমকি দিচ্ছিল মারধরকারীরা। ওই সময় কয়েকজন এসে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার পর মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। প্রথমে ময়নাগুড়ি এবং পরে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ছাত্রীর চিকিৎসা চলে। বর্তমানে ওই ছাত্রী বাড়ি গেলেও সে পুরোপুরি সুস্থ হয়নি।
এ ঘটনায় পুলিশের দাবি, মূল অভিযুক্ত কয়েকজনকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আত্মীয়দের বাড়িতেও তল্লাশি চলছে। ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানার জন্য আশেপাশের বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে অভিযুক্ত পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মিথ্যা কথা রটানো হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। কথা কাটাকাটি থেকে ধাক্কাধাক্কি হলেও কোনো মারধর হয়নি বলে দাবি অভিযুক্ত পরিবারের।