‘নাইট শিফট’ এর চাকরিজীবীরা যে বিপদ ডেকে আনছেন
যারা ‘শিফট’ভিত্তিক চাকরি করেন, তারা ঘুম ও বিপাকক্রিয়াজনিত সমস্যায় ভোগেন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এ সমস্যা দীর্ঘায়িত হতে থাকলে ব্যক্তি বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনছেন বলে সতর্ক করেছেন তারা।
পালাবদলের চাকরি করে ঘুমের সমস্যায় ভুগতে ভুগতে একসময় হৃদরোগীতে পরিণত হতে হয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের তৌরো ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক পালাবদল করে চাকরি করা ব্যক্তিদের ওপর গবেষণা করে এমন ফলই পেয়েছে।
দ্য জার্নাল অব দি আমেরিকান অস্টিওপ্যাথিক অ্যাসোসিয়েশনে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
তারা জানিয়েছেন, নাইট শিফটের চাকরি একজন মানুষকে ক্রমেই হৃদরোগ, ‘স্ট্রোক’ ও ‘টাইপ-টু ডায়াবেটিস’য়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকে।
গবেষণার প্রধান তৌরো ইউনিভার্সিটির ভারতীয় বংশোদ্ভূত শামা কুলকার্নি বলেন, পালাবদলের চাকরি আর রাতের ঘুমকে ত্যাগ করে যারা কোম্পানির জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে ওঠেন, তাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।
তিনি বলেন, এসব চাকরিজীবীকে নিয়ে আমাদের এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের ‘শিফট’-এ কাজ করেন এমন নার্সদের ৯ শতাংশ বিপাকক্রিয়াজনিত বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হন। আর দিনের শিফটের নার্সরা এই সমস্যায় আক্রান্ত হয় মাত্র ১.৮ শতাংশ। যেসব নার্স যত বেশি শিফটভিত্তিক কাজ করে, তার হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকির মাত্রা ততই বাড়ে।
এর ব্যাখ্যায় গবেষক শামা কুলকার্নি বলেন, রাতের ‘শিফটে কাজ করার কারণে শরীরের স্বাভাবিক চক্রতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ বলে।
এই চক্রটি স্নায়ু ও হরমোনজনিত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে। ঘুম ও জেগে থাকার সময় নির্ধারিত না থাকলে চক্রটি তাল হারিয়ে ফেলে। যে কারণে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে ‘কর্টিসল’, ‘ঘ্রেলিন’ ও ‘ইনসুলিন’ বেড়ে যায়। আর কমে যায় ‘সেরোটনিন’ ও অন্যান্য হরমোন।
আর হরমোনের এই ভারসাম্যহীনতাই বিপাকক্রিয়াজনিত সমস্যা তৈরি করে এবং ব্যক্তিকে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের দিকে নিয়ে যেতে থাকে।
এমন সমস্যার সমাধানও দেয়া হয়েছে ওই গবেষণাপত্রে।
যেখানে বলা হয়েছে, এমন শিফটভিত্তিক চাকরিজীবীতের উচিত প্রতিদিন একই সময়ে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর আর রাতে না পারলেও সময়টা সন্ধ্যা অর্থাৎ রাতের কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করা। এতে সার্কাডিয়ান রিদমে ব্যাঘাত কম ঘটবে।