নৌকায় ভোট দিলে প্রয়োজনে রক্ত দিবো

নৌকায় ভোট দিলে প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার করার ওয়াদা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি কারণ সব সময় সহযোগিতা পেয়েছি। আমি যখন দেশে এসেছি তখন আপনাদের মধ্যে খুঁজে পেয়েছি হারানো বাবা-মা ও ভাইয়ের স্নেহ। তাই আপনাদের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত।’

‘যেভাবে আমার বাবা আপনাদের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে হলেও আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সুন্দর জীবন দিবো। সেই ওয়াদা করছি’ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (২১ মার্চ) বিকালে চট্টগ্রামের পটিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

এসময় চট্টগ্রামবাসীর কাছে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার ওয়াদা চান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকায় ভোট দেবেন কি-না, হাত তুলে ওয়াদা করুন। তখন নেতাকর্মীরা হাত তুলে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অঙ্গীকার করেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশে উন্নয়ন হয়। একমাত্র আমরা যদি নৌকা মার্কায় ভোট পাই তাহলেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকবে।’

সভায় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন করি। আর বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে দেশকে পিছিয়ে দেয়। বিগত নির্বাচন ঠেকানোর নামে খালেদা জিয়ার নির্দেশে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। খালেদা ও তার দুই ছেলে কালো টাকা সাদা বানিয়েছে। তাদের পাচারের টাকা বিদেশে ধরা পড়েছে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে, নাতি-পুতি পর্যন্ত যাতে চাকরি পায় তার জন্য কোটার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের জন্যই আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি এ কথা ভুললে চলবে না। তাদের জন্য কোটার ব্যবস্থা করেছি। আর যদি কোটায় না পাওয়া যায়, সেটা শিথিল করা আছে, যেখানে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের চাকরি দেওয়া যাবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমাদের এ বিশেষ ব্যবস্থা করতেই হবে।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার দিয়ে সরকার তা পূরণ করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমগ্র বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, পুরো চট্টগ্রামে বর্তমান সরকার ব্যাপকভাবে উন্নয়ন করছে। বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষায় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ১ কোটি ৩০ লাখ মায়ের হাতে উপবৃত্তির টাকা দিচ্ছি, যেন তাদের সন্তানেরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশকে উন্নয়ন করতে চাই। আমার একটাই চিন্তা এ দেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছে। বাবা-মা বুকের রক্ত দিয়ে গেছে। আমি চাই প্রতিটি মানুষ উন্নত জীবন পাবে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সবাই উন্নত সুন্দর জীবন পাবে। আমার রাজনীতি জনগণের কল্যাণের, জনগণের উন্নয়নের জন্য। আমার রাজনীতি জনগণের কল্যাণের জন্য, প্রতিটি মানুষের উন্নত-সুন্দর জীবনের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। জাতির জনক এই দেশে স্বাধীন করে দিয়ে গেছে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে, কারও কাছে হাত পেতে নয়। কেউ ভিক্ষুকের অপবাদ দিতে পারবে না। আপনারা জানেন পদ্মা সেতু নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলো বিশ্বব্যাংক। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আবদুস ছালাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন প্রমুখ।

 

ই-বার্তা/এস