ফেসবুক কেলেঙ্কারি: প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের তথ্য ফাঁস
ই-বার্তা।। ফেসবুক বলেছে, পাঁচ কোটি নয়, প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা (সিএ)।
প্রতিষ্ঠানটি যাদের তথ্য নিয়েছে, তাদের অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। তবে এক কোটি ৬০ লাখ ব্যবহারকারী অন্য দেশের, যাদের মধ্যে প্রায় ১১ লাখ যুক্তরাজ্যে থাকেন।
ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ বলেন, নিজেদের দায়িত্বের ক্ষেত্রে আমরা বেশি নজর দিইনি। সত্যিকার অর্থে এটি বিশাল ভুল ছিল। আর ভুলটি ছিল আমার নিজের।
এ তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় কাউকে চাকরি হারাতে হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ জায়গাটি আমিই তৈরি করেছি। আমি এটি চালাই। এখানে যা ঘটছে, সব কিছুর জন্য আমি দায়ী। আমি ভালো কিছু করতে যাচ্ছি, ভালো কিছু করা আমাদের পক্ষে সম্ভব। জাকারবার্গ বলেন, নিজের ভুলের জন্য আমি কাউকে চলন্ত বাসের নিচে ছুড়ে ফেলতে পারি না।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারের কৌশল নির্ধারণে ফেসবুক গ্রাহকদের তথ্য ব্যবহার করেছিল ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা।
ব্রিটিশ ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি গত মাসে ওই ঘটনা ফাঁস করে দিলে বড় ধরনের ধাক্কা খায় ফেসবুক। তীব্র সমালোচনার মুখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের তথ্যের গোপনীয়তা পরিবর্তন আনে। বিজ্ঞাপনদাতাদের পরামর্শক হিসেবে কাজ করে, এমন কয়েকটি ডেটা ব্রোকার ফার্মের সঙ্গে ব্যবসাও বন্ধ করে দেয়া হয়।
ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা ওই তথ্য কিনেছিল দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ নামে একটি কুইজভিত্তিক ফেসবুকঅ্যাপের মালিকের কাছ থেকে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের তৈরি করা ওই অ্যাপের মাধ্যমে চালানো ওই কুইজে অংশ নিয়েছিলেন তিন লাখ পাঁচ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী।
আর তাদের বন্ধুতালিকা থেকে আরও কয়েক কোটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছিল ওই অ্যাপের মাধ্যমে।
কতজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে গেছে, সে বিষয়ে একটি ব্লগে ধারণা দিয়েছেন ফেসবুকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা। তিনিই জানিয়েছেন, ওই সংখ্যা আট কোটি ৭০ লাখের মতো হতে পারে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাকারবার্গ বলেন, আমাদের আরও অনেক কিছু করা উচিত ছিল, আমরা সেটি করব।
জাকারবার্গ বলেন, তিনি আগে ভাবতেন, ফেসবুকের সুবিধাকে কীভাবে ব্যবহার করল, সেই দায় ব্যবহারকারীর ওপরই বর্তাবে।
কিন্তু এখন ফেসবুকপ্রধানের ধারণা হয়েছে- তার সেই চিন্তায় সীমাবদ্ধতা ছিল। তিনি এখন বুঝতে পারছেন, ফেসবুককেও আরও দায়িত্ব নিতে হবে।