বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি
বিনোদন ডেস্ক ।। পায়েল মুখার্জি। কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। মাইকেল, ভানু, ফাঁস, দেখ কেমন লাগে, রাজবাড়ী, চল কুন্তল-এ অভিনয় করে নিজের জাত চিনিয়েছেন এ অভিনেত্রী। মারাঠি ও হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্রেও নাম লিখেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ‘ক্যাপ্টেন খান’ নামে একটি ঢাকাই ছবিতে যুক্ত হয়েছেন এ টালিউড তারকা। ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত ছবিটিতে শাকিব খানের বিপরীতে দেখা যাবে তাকে।
অভিনয়জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে তার মুখোমুখি হয় ই-বার্তা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহান আহামেদ।
ই-বার্তাঃ এর আগেও ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে বাংলাদেশে এসেছিলেন
পায়েল মুখার্জিঃ জি, সেটা দুই বছর আগে। ‘শ্যাওলা’ নামে একটি ছবিতে ফেরদৌস ভাইয়ের বিপরীতে কাজ করতে বাংলাদেশে এসেছিলাম। ২০১৬ সালের কথা। কিছুদিন শুটিংও হয়েছিল। এরপর শুটিং বন্ধ। তারপর থেকে এ বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজক এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।
ই-বার্তাঃ এবার তো শাকিব খানের বিপরীতে ‘ক্যাপ্টেন খান’-এ অভিনয় করছেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
পায়েল মুখার্জিঃ এ মুহূর্তে শাকিব খান বাংলাদেশের এক নাম্বার হিরো। তার সঙ্গে কাজ করব, সেটা আমার জন্য নিঃসন্দেহে দারুণ ব্যাপার। তাই প্রত্যাশাও অনেক। এই সিনেমায় আমার চরিত্রটিও খুব পছন্দ হয়েছে। চিত্রনাট্য পড়ে এক কথাতেই রাজি হয়ে যাই। আশা করছি ভালো কিছু হবে। গল্পটার টুইস্ট আছে। সব মিলিয়ে বলব, ‘ক্যাপ্টেন খান’ একটি ভালো গল্পের সিনেমা।
ই-বার্তাঃ এখানকার নবাগত তাসকিন রহমানের সঙ্গে ‘বয়ফ্রেন্ড’ সিনেমার কতদূর?
পায়েল মুখার্জিঃ হ্যাঁ, ‘বয়ফ্রেন্ড’ সিনেমাটিতে আমার যুক্ত হওয়ার খবরও প্রকাশ হয়েছে। আমিও এ সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম। আপাতত ‘বয়ফ্রেন্ড’ সিনেমাটিতে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রজেক্টের সঙ্গে আমার সময়ও সেভাবে মিলছে না। আবার ওয়ার্ক পারমিটও আসেনি। সব মিলিয়েই প্রজেক্টটিতে থাকতে পারছি না।
ই-বার্তাঃ কেমন লাগছে বাংলাদেশে?
পায়েল মুখার্জিঃ বাংলাদেশ আমার সেকেন্ড হোম। এখানে এলে মনে হয় না আমি দেশের বাইরে কিংবা অন্য একটি দেশে আছি। এখানকার মানুষ, সংস্কৃতি থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুই আমাদের মতো। মাঝখানের কাঁটাতারের বেড়া ছাড়া আর বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। তবে বাংলাদেশে একজন অতিথিকে যেভাবে আপ্যায়ন করে, সেটা অন্য কোথাও নেই। জানেন তো আমার নানাবাড়ি খুলনায়। আমার মায়ের জন্মও এখানে।
ই-বার্তাঃ বাংলাদেশি সিনেমা দেখেন?
পায়েল মুখার্জিঃ আমার মনে আছে ছোটবেলা আমাদের এখানে চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা দেখা যেত, এখন আর দেখা যায় না। মানে তেমন একটা দেখা হয় না। যৌথ প্রযোজনার ‘শিকারি’ ছবিটি হলে গিয়ে দেখেছিলাম। তা ছাড়া কলকাতায় বাংলাদেশি ছবি দেখার সুযোগও কম।
ই-বার্তাঃ আমাদের এখানকার ফিল্ম সম্পর্কে বলুন।
পায়েল মুখার্জিঃ এখানকার ফিল্ম সম্পর্কে খুব যে জানি, তা না। খুব অল্পই জানি। তবে এরই মধ্যে ইউটিউবে জানার চেষ্টা করছি। আমার ধারণা, কলকাতা আর বাংলাদেশের সিনেমার খুব একটা পার্থক্য নেই। তবে আমাদের চলচ্চিত্র বাজারটা বলিউডের মুভি অনেকাংশে খেয়ে নিচ্ছে। আপনাদের এখানে বলিউড মুভির সে প্রভাবটা অন্তত নেই।
ই-বার্তাঃ বাংলাদেশের নাটক নিশ্চয়ই দেখা হয়।
পায়েল মুখার্জিঃ আমি বাংলাদেশের নাটকের ভীষণ ফ্যান। আমি কলেজ লাইফেও প্রচুর নাটক দেখেছি। তিশা আমার ভীষণ ফেভারিট একজন অ্যাক্টর। মোশাররফ করিম ভাইয়ের অনেক অভিনয় দেখেছি। আমি ওনারও ভীষণ ফ্যান।
ই-বার্তাঃ ফিল্মে কি তেমন কেউ আছে?
পায়েল মুখার্জিঃ ফিল্মে বলাটা ডিফিকাল্ট। সিনেমায় যদি বলি শাকিব খানের কথা বলব ডেফেনেটলি।
ই-বার্তাঃ এটা কি বলতে হবে সে জন্যই বলা?
পায়েল মুখার্জিঃ আসলে বিষয়টা নিয়ে আমি খুব বেশি আলোকপাত করব না। শাকিব খানেরও ‘নবাব’ ও ‘শিকারি’ দেখেছি। অনেক ফিল্ম দেখতে পারিনি, তাই আমার পক্ষে বলাটা ডিফিকাল্ট। জয়া আপু আমাদের এখানে কাজ করছেন। তাকেও ভালো লাগে। নির্মাতা ফারুকী (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) ভাইকেও ভালো লাগে।
ই-বার্তাঃ ফার্মাসিতে পড়েছেন, সেখান থেকে অভিনয়, কীভাবে?
পায়েল মুখার্জিঃ এই দুটো জিনিস একেবারেই ভিন্ন। একটির সঙ্গে অন্যটির সম্পর্ক নেই। পাঁচ বছর বয়সে আমার নাচের হাতেখড়ি। কত্থক শিখেছি অনুপ শঙ্করের কাছে। কলেজে উঠে যোগ দিই থিয়েটারে। তবে মা-বাবা চেয়েছিলেন, আগে পড়াশোনাটা শেষ করি। পড়াশোনা শেষে অভিনয় করব এমন ইচ্ছে তো ছিলই।
ই-বার্তাঃ আপনি তো একই সঙ্গে তিন-চারটে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন?
পায়েল মুখার্জিঃ বাংলাদেশ-কলকাতার বাইরেও আমি কিছু কাজ করছি। সামনেই মুক্তি পাবে আমার অভিনীত মারাঠি সিনেমা ‘মোর গাঁও মোর দেশ’। এ মুহূর্তে একটি হিন্দি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এটার কাজ শুরু হবে সেপ্টেম্বরে। সিনেমার নাম ‘মে রাম বান না চাতিহো’। এ সিনেমা সম্পর্কে এর বেশি কিছু বলতে চাই না।
ই-বার্তাঃ আমাদের এখানে নতুন করে আর কোনো ফিল্মে কাজ করছেন?
পায়েল মুখার্জিঃ অনেকের সঙ্গেই কথা হচ্ছে। তবে কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।
ই-বার্তাঃ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
পায়েল মুখার্জিঃ আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
ই-বার্তা ।। ডেস্ক