বিল্ডিং কোড না মানার খেসারত দিতে হচ্ছে জীবন দিয়ে
ই-বার্তা ডেস্ক।। পুরান ঢাকার নিমতলী, চকবাজারের চুড়িহাট্টা না হয় ঘিঞ্জি এলাকা, কিন্তু বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় কী করে আগুন এমন ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে! সময়ে হয়তো সেটিও পরিষ্কার হবে।
কিন্তু ২২ তলার এফআর টাওয়ারে যে এতজন মানুষের প্রাণহানি ঘটল, এর জন্য আমরা কাকে দায়ী করব? ভাগ্যকে, ভবন কর্তৃপক্ষকে, নাকি ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে যে নীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের?
জানা গেছে, সুউচ্চ এফআর টাওয়ারে ২৫টির মতো বিভিন্ন অফিস ছিল। গড়ে প্রতি অফিসে ১০০ জন করে কর্মজীবী থাকলেও সে সংখ্যা দাঁড়ায় ২ হাজার ৫০০। সিঁড়ির ব্যাসার্ধ ছিল ৩৬ ইঞ্চি। ভূমিকম্প কিংবা আগুন লাগলে মাত্র ৩৬ ইঞ্চি চওড়া সিঁড়ি দিয়ে একসঙ্গে কীভাবে এত মানুষ জরুরি ভিত্তিতে নামবে, সে প্রশ্ন সামনে চলে আসে।
ভবন কর্তৃপক্ষ যে এ ব্যাপারে উদাসীন ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আবার এ ভবনে যারা অফিস নিয়ে কার্যক্রম চালিয়েছেন, তারাও হয়তো নিরাপত্তার বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখার অবকাশ পাননি। তবে ভবন মালিকই যে এ ক্ষেত্রে সর্বেসর্বা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার কথাই চূড়ান্ত। বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় একটি অফিস পাওয়াও অনেকে সৌভাগ্য মনে করেন।
পুরান ঢাকার বাড়িগুলোর মতোই এই টাওয়ারটিরও দু’পাশে তেমন কোনো জায়গা ছিল না, যেখান দিয়ে কেউ জরুরি প্রয়োজনে নেমে আসতে পারে। অফিসগুলোতে যে এত মানুষ চাকরি করতেন, তাদের কেউ কেউ সচেতন থাকলেও হয়তো নিতান্ত বাধ্য হয়ে ঝুঁকি জেনেও কাজ করে গেছেন।
বিল্ডিং কোড অনুযায়ী জমির সীমানার চারপাশ থেকে কিছু জায়গা ছেড়ে প্রতিটি ভবন নির্মাণ করতে হয়, যাতে দুটি ভবনের মাঝখানে পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। এটি নিয়মের কথা, নীতিমালার কথা। বাস্তবে যা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যে যেভাবে পারছেন, আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করছেন, যে কারণে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সরকারকে সামগ্রিকভাবে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
ই-বার্তা / আরমান হোসেন পার্থ