মসজিদ মাদ্রাসার নামে রাস্তায় চাঁদা তোলা কী জায়েজ?

রাস্তা-ঘাটে চলাচলরত অবস্থায় বিভিন্ন সময় মসজিদ, মাদ্রাসার নাম করে চাঁদা তোলা হয়। কেউ কেউ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, উন্নয়নের লক্ষে অনেক অর্থদান করেন। আবার কেউ কেউ এটা নিয়ে অনীহা প্রকাশ করেন। অনেকে এটা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন তোলেন।

এমনই একটি প্রশ্ন করা হয় দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সরাসরি ইসলাম নিয়ে প্রশ্নোত্তরমূলক বিশেষ অনুষ্ঠান ‘শরিফ মেটাল প্রশ্ন করুন’ এ। এই অনুষ্ঠানে কোরআন ও হাদিসের আলোকে দর্শক-শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়। ওই অনুষ্ঠানের এক প্রশ্নোত্তর পর্বে একজন দর্শক একটি প্রশ্ন করেন আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ইসলামী চিন্তাবিদ হাফেজ মুফতি কাজী মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

প্রশ্ন: মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণের নামে রাস্তাঘাটে মুক্ত হস্তে দানের নামে যা চলছে, ইসলামি শরিয়তে সে বিষয়ে কী বলে?

উত্তর: অনেক সময় দেখা যায় রাস্তাঘাটে গাড়ি বাধ্যতামূলকভাবে থামিয়ে এক ধরনের জোরপূর্বকভাবেই মসজিদ মাদরাসা নির্মাণের জন্য টাকা তোলা হচ্ছে। এভাবে টাকা উঠানো উচিত নয়। আসলে উপমহাদেশ যখন ব্রিটিশদের দখলে চলে যায়, তখন পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের মসজিদ মাদ্রাসার জন্য বিশাল জায়গা ওয়াকফ করা ছিল। সে ওয়াকফের সম্পত্তি থেকে মাদ্রাসা মসজিদের খরচ খুব ভালভাবেই চলত।

ব্রিটিশরা যখন এইসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেয় তখন থেকেই এইসব মসজিদ মাদ্রাসা পথের ভিখারিতে পরিণত হয়। তখন থেকেই এক শ্রেণির আলেমরা সম্মানজনকভাবে সেটা সমাধানের চেষ্টা করে। যারা পারেননি তারা বিভিন্ন ভাবে এগুলোকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। মুদ্রার একটি দিক খারাপ হলে আরেকটি দিক খেয়াল রাখতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই কিন্তু হাজার হাজার মসজিদ মাদ্রাসা টিকিয়ে রাখা হচ্ছে। যারা এই প্রশ্নগুলো করছেন তাদের এটা বলা উচিত যে টাকা আমাদের চাইতে হবে না, আমরা নিজে থেকেই দিয়ে দিব।

খ্রিস্টানদের মাঝেও এই প্রক্রিয়াটা আছে তাদের বেতনের একটা অংশ চ্যারিটিতে চলে যায়। এইগুলো তারা মুসলমানদের থেকে নিয়েছে। আমরাও যদি সামাজিকভাবে এই সুন্দর নিয়মগুলো চালু করি তাহলে আমাদের মসজিদ মাদ্রাসার জন্য আর মাইকিং করে টাকা চাইতে হবে না। আমরা সবাই উদ্যোগ নিলে ইনশাল্লাহ এটা বন্ধ হয়ে যাবে।

ই-বার্তা/এস