মির্জা ফখরুল বলেছেন, এ দেশে জঙ্গিবাদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ
ই-বার্তা ডেস্ক ।। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটা অদৃশ্য শক্তি দেশ চালাচ্ছে। সব বাহিনীর প্রধানরা যে ভাষায় প্রকাশ্যে কথা বলেন, তাতে মনে হয় না কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেশে আছে। প্রকৃতপক্ষে এ দেশে আওয়ামী লীগের কোনো সরকার নেই। এখানে যে সরকারটা আছে, সেটা যারা এ দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে তাদেরই একটা পুতুল সরকার।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় শিক্ষার্থী হত্যা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিএনপি মহাসচিব। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছেলেরা তো বেশি কিছু চায়নি। তারা অধিকার চেয়েছে। আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য বলেছে। সেটা আপনারা করলেন না, চেষ্টাও করেননি। তবে আদালত নিয়ে দাম্ভিকতা, জমিদারসুলভ ব্যবহার করেছেন। বারবার ধমক দিয়েছেন, হুমকি দিয়েছেন। পরে তাদের গুলি করে হত্যা করেছেন। এরা শহীদ, এরা আমাদের সন্তান। এ দেশ সৃষ্টির পর এত ভয়াবহ নৃশংস ঘটনা আর দেখিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো বাছবিচার নেই। একটা ছেলে গুলি খেয়েছে, গুলি খাওয়ার পর তার বন্ধু যখন টেনে নিয়ে যাচ্ছে আবার সরাসরি গুলি করলেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর ছেলেকে যখন হাসপাতালের মর্গে পান, তখন তিনি ফোন করে ওপরের কর্তাকে বলেছেন– ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে।’ এ দৃশ্য আমাদের দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে। তার পরও আমরা বলব– এটা একটা রাষ্ট্র, এর জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, এখন গাঁয়ের মোড়লের দৃশ্য দেখছি। যাদের হত্যা করা হলো, তাদের পরিবার-পরিজনকে টাকা দিচ্ছেন। এভাবে কি ওই পরিবারের সমস্যা সমাধান করতে পারবেন? আপনার পুলিশ তো গুলি করে মেরেছে। একটা পুলিশের বিরুদ্ধেও তো ব্যবস্থা নিলেন না। রংপুরের সাঈদের বিষয়ে বরং উল্টো তথ্যমন্ত্রী অশালীন ও অশ্রাব্য কথাবার্তা বলেছেন, যা কোনোমতেও মেনে নেওয়া যায় না। গণহত্যার দায় নিয়ে সরকারকে এখনই ক্ষমতা ছাড়ার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবেই শেষ করতে হবে। একটা নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দেশে জঙ্গিবাদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ। এ সরকার পরিকল্পিভাবে জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণহত্যার তদন্ত অবশ্যই জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে হওয়া উচিত। কারণ এ সরকারের তদন্ত আমরা বিশ্বাস করি না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।