মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে মারধর
ই-বার্তা ডেস্ক ।। ফেসবুকে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে মারধরের ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা ওই মামলায় তাকে প্রধান আসামি করে আরও ৮ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়।
রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা শিবা আক্তার যুথিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করেছিলেন কয়েক তরুণ। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন ওই তরুণীর বাবা জসিম উদ্দিন। এতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক এবং তার সহযোগীরা তাকে ১৬ আগস্ট রাতে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করেছেন বলে তরুণীর অভিযোগ। গুরুতর অসুস্থ জসিম উদ্দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অভিযুক্ত এনামুল ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের পাশাপাশি পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। মারধরের শিকার জসিম ওই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, জসিম উদ্দিনের মেয়ে বাদী হয়ে বুধবার রাতে মামলা করেছেন। এর আগে ওই ঘটনায় জিডি করেছিলেন তিনি। বাদী শিবা আক্তার যুথি বলেন, তাকে পল্টন থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কাউন্সিলরের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য লিখে পোস্ট করছিলেন। তার বাবা এর প্রতিবাদ করলে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে শান্তিনগরের হোয়াইট হাউজ হোটেলে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বেদম মারধর করা হয়। তিনি প্রান বাঁচাতে বাইরে চলে আসলেও তার উপর হামলা চালানো হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শিবা আক্তার যুথি পল্টন মডেল থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর বিবাদী মিরন, রানা, রাশেদ ও রায়হান তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা বানোয়াট, কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলেন এবং পোস্ট করেন। তা নিয়ে তার বাবা জসিম উদ্দিন ১৬ আগস্ট রাত পৌনে ১২টার দিকে শান্তিনগর এলাকার হোয়াইট হাউসের ভেতরে মিরন, রানা, রাশেদ ও রায়হানদের পেয়ে বাজে মন্তব্য না করার অনুরোধ করেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জসিম উদ্দিনকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন। গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে মামলার এক নম্বর আসামি তথা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হকের নির্দেশে তার বাবাকে এলোপাথাড়িভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। সেখান থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এলে আসামিরা যুথির বাবার পথরোধ করে এলোপাতাড়িভাবে কিলঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তার বাবা রাস্তায় পড়ে গেলে বিবাদীরা মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে বুকের ওপর উঠে লাথি মারলে পাঁজরের হাড় সরে যায়।
মামলায় যুথি বলেন, তার বাবার চিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে এলে বিবাদীরা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলে যান। আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকলে পথচারীরা প্রথমে কাকরাইলে একটি হাসপাতালে তার বাবাকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। তার বাবা বর্তমানে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর এনামুল হক জানান, মিরন ও জসিম হাতাহাতি করেছে তার সামনেই। তিনি উভয় পক্ষকেই থোমানোর চেষ্টা করেছন। এরপরও তাকে মামলার আসামি করা হলে তা দুঃখজনক।
পল্টন থানা পুলিশ জানায়, মামলার অপর আসামিরা হলেন- আলী রেজা খান, এনামুল হক পান্না, নাজমুল হোসাইন, রাশেদুল আলম, শামছুল আলম, শফিউল আজম, মঞ্জুরুল হক, শাহ আলম, এইচ এম রায়হান। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ছয় থেকে সাতজনকে আসামি করা হয়।