রিজভীকে শালীনতা ও ভদ্রতা বজায়ের পরামর্শ হাছানের
রাজনীতি ডেস্ক ।। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর অশালীন ভাষায় সরকারকে আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ।
ক্ষমতাসীন দলের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘রিজভী আহমেদ সুবিন্যস্ত অশোভন ভাষায় বক্তব্য রাখেন এবং যেভাবে বিষোদগার করেন তা রাজনৈতিক শালীনতা ও ভব্যতার সীমা অতিক্রম করে।’বিএনপি ‘সকাল-বিকেল সরকারের বিরুদ্ধে বিষেদগার ও মিথ্যাচার করছে’ অভিযোগ করে ‘অশোভন’ বক্তব্য পরিহার ও ‘রাজনৈতিক শালীনতা-ভদ্রতা’ মেনে চলারও অনুরোধ জানান হাছান।বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগের মুখপাত্র।হাছান বলেন, ‘বিএনপি নেতারা নয়াপলন্টনের কার্যালয়ে বসে সকাল-বিকাল সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেন।’‘দেশে গণতন্ত্র আছে বিধায় বিএনপি প্রতিদিন তাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এবং প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অগণতান্ত্রিক এবং অশোভন ভাষায় সরকার এবং সরকারের নেত্রীবৃন্দের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে।’বিএনপি আমলের কথা স্মরণ করালেন হাছান।বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে রাজপথে কীভাবে পেটানো হতো, সেটিও তুলে ধরেন হাছান।বলেন, ‘২০০২ সালে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল এবং সুধা সদনের অফিসটি তল্লাশি করে তছনছ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল তৎকালীন বিএনপি সরকার।’
‘২০০১ সালের ১৫ জুন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ওই ঘটনার সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে।’‘আওয়ামী লীগ অফিসে বারবার হামলা করা হয়েছে। জেলার নেতাদের সাথে আওয়ামী লীগ সভাপতির মিটিংয়ে পুলিশি হামলা করা হয়েছিল।’‘বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিমসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়েছিল। প্রেসক্লাবের সামনে সোহেল তাজকে পিটিয়ে কাপড় ছিড়ে দেওয়া হয়েছিল।’‘জনসভায় প্রকাশ্যে বোমা হামলা চালিয়ে আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যার পর সংসদে একটি শোক প্রস্তাবও আনতে দেওয়া হয়নি।’‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে প্রকাশ্যে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করার উদ্দ্যেশ্যে তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও তারেক জিয়ার নির্দেশনায় যেভাবে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল তা ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে।’হাছান বলেন, ‘গত সাড়ে নয় বছরে বিএনপির কোন জনসভায় হামলা হয়নি। তাদের (বিএনপির) কোনো সিনিয়র নেতাকে রাস্তায় পুলিশের পিটুনির শিকার হতে হয়নি।’‘সুতরাং আজকে বিএনপির নেতারা যে সব বক্তব্য রাখেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানাব আয়নায় প্রথমে নিজেদের চেহারা দেখার জন্য।’‘বিএনপি যতদিন ক্ষমতায় ছিল, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সব সময় ব্যারিকেড থাকত। এখন বিএনপি অফিসের সামনে সবসময় ব্যারিকেড থাকে না।’
খালেদা অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছেন।কারাগারে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো সুযোগ সুবিধা না দেয়ার বিষয়ে বিএনপির অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন হাছান। বলেন, ‘বেগম জিয়া কারাগারে প্রথম শ্রেণির কয়েদির চেয়েও অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন।’‘সার্বক্ষণিক একজন নার্স ও একজন ডাক্তারের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন এবং আলাদা রান্নাঘরও আছে। ব্যক্তিগত সহকারী ফাতেমাও আছেন।’‘২০০৭ সালের ১৬ জুলাই আমাদের নেত্রীকে যখন গ্রেপ্তার করা হয় তখন তাকে যেভাবে রাখা হয়েছিল, আজকে বেগম জিয়া যে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাচ্ছেন এই সুবিধাগুলো আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পাননি।’‘এটা কোটা আন্দোলন নয়’।সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের নামে আন্দোলনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলেও দাবি করেন হাছান মাহমুদ। বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম আন্দোলনের সাথে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। এতদিন বিএনপি পেছন থেকে সমর্থন দিলেও এবার বিএনপি প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে আমাদের বক্তব্য যে সঠিক ছিল তা প্রমাণ করেছে।’‘এটা কোটাবিরোধী আন্দোলন নয়। প্রকৃতপক্ষে সরকারবিরোধী, রাষ্ট্র বিরোধী আন্দোলন। তা প্রমাণ হয়েছে।’আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মো. আব্দুল্লাহ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ই-বার্তা ।। ডেস্ক