রোহিঙ্গা সঙ্কট দ্রুত সমাধান না হলে ক্ষতির সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ
ই-বার্তা ।। রাহাত এম আহমেদ ।। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসের ২৫ তারিখ থেকে বহু পুরনো রোহিঙ্গা সমস্যা আবার নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সপ্তাহখানেকের ভিতরে অনবরত রোহিংঙ্গা শরণার্থীদের অনুপ্রবেশের ফলে এ সমস্যাটি খুব দ্রুত জাতীয় সংকটে পরিনত হয়।
১৯৮২ সালে সামরিক জান্তা মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব বাতিল করে এবং তাদের নজরদারির আওতায় নিয়ে আসে। তাদের জন্যে নানাবিধ সুযোগ সুবিধা সীমিত করে দেয়ার পাশাপাশি নিয়মিত নির্যাতনের শিকারে পরিনত করা হয়। রাষ্ট্রের তার নিজের নাগরিকদের প্রতি এমন বিমাতাসুলভ আচরনের প্রভাব সরাসরি পড়তে থাকে বাংলাদেশের উপর।
১৯৭৮ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করেছে। দীর্ঘদিন বসবাসের ফলে যাদের অনেকেই মিশে গেছে স্থানীয়দের সাথে।এদের এই অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে সরাসরি প্রভাব ফেলছে,ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাংলাদেশের শ্রমপেশাজীবি মানুষ।
এরূপ মানবিক সংকটে বাংলাদেশ সরকার মানবতার পরিচয় দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও এটা মনে রাখা জরুরী যে বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীন বিভিন্ন সঙ্কট মোকাবেলা করছে এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে যত বিলম্ব করা হবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রের নানা দিক থেকে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
একই সাথে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে না পারলে তাদের ক্যাম্পের মানবেতর এবং ঝুঁকিপূর্ণ জীবন আরো দীর্ঘ হবে এবং বিভিন্ন রকম ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার কারনে মৃত্যুর মিছিল আরো লম্বা হবে।
একটি দেশের সরকারের স্বৈরাচারী এবং অন্যায় সিদ্ধান্তের কারনে দুই দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী তাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ শিকারে পরিনত হচ্ছে। ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষে চীন,ভারতের মত শক্তিশালী দেশ দুইটিও মায়ানমার সরকারকে সমর্থন যুগিয়ে চলেছে। যেহেতু বাংলাদেশ এই সমস্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পরেছে তাই এই সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে বিশ্ব-জনমত তৈরির পেছনে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভুমিকা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।
এই উদ্দেশ্যে কাজ করতে গেলে রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কিত আলোচনার বিশ্লেষণ এবং ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিক অনুসরন করে তা যাচাইকরনের মাধ্যমে এর রূপ পরিবর্তনের ধারা এবং বর্তমান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা লাভ করা প্রয়োজন, কেননা এছাড়া বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গায় এই সংকট মোকাবেলা করার কোন বাস্তব সম্ভাবনা খুঁজে বের করা দুষ্কর।
Photo: Rahat M Ahmed