শোক ও শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ নগর উত্তর ছাত্রলীগের
ই-বার্তা ।। ১৫ আগস্ট ছিল মহান স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করে দিনটি।
১৯৭৫ সালের শোকাবহ এই কালো দিবসে ভোররাতে সেনাবাহিনীর বিপথগামী কিছুসংখ্যক সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।
পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তাঁর ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবনেতা ও সাংবাদিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু, কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে এ মাসের প্রথম দিন থেকেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসুচি দেয় ছাত্রলীগের সুপার ইউনিট খ্যাত ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ। যারা রাজধানীতে বিভিন্ন সময় প্রতিকূল পরিবেশে বিভিন্ন সমস্যায় আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যান গার্ড হিসেবে কাজ করে আসছে। নগর উত্তর ছাত্রলীগের অন্তর্গত প্রত্যেকটি থানা, কলেজ, ইউনিট আলাদা আলাদা কর্মসুচি আয়োজন করে।
গত ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। উক্ত আলোচনা স্লোগানে স্লোগানে শোককে শক্তিতে পরিণত করে মুজিব আদর্শের সৈনিকেরা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি। উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইব্রাহীম হোসেন এবং সঞ্চালনা ও পরিচালনা করেন জনাব সাইদুর রহমান হৃদয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশকে উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। এই সময়ে ছাত্রলীগকে পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
আমু আরও বলেন, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত ঘটাতে একটি চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। যারা ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তারাই জড়িত এর পিছনে। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে স্নেহ করেন উল্লেখ করে আমির হোসেন আমু বলেন, সবার ভিতরে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় রেখে এক যোগে কাজ করে যেতে হবে দেশের জন্য। ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যৎ। তারা জাতির মূল চালিকাশক্তি।
ছাত্রলীগকে সর্বদা সচেতন থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনছে সরকার।
আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম হোসেন মুজিব আদর্শের সৈনিকদের সতর্ক করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ১৫আগস্ট সপরিবারের হত্যার পরেও ষড়যন্ত্র এখনো চলছে।
উক্ত সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয় মুজিব আদর্শে অনুপ্রাণিত তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। এই শোকের মাসে শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন।
এই সংগঠনের আদর্শকে আমরা বুকে ধারণ করি। আমরা কোনো ব্যাক্তির রাজনীতি করতে আসিনি, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করি এবং শেখ হাসিনার দেখানো পথে চলি।
এ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, আলহাজ্ব সাদেক খান, ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাকা মহানগর উত্তর ছত্রলীগের অন্তর্গত সকল থানা, কলেজ ইউনিটের নেতা কর্মীরা ও সাবেক নেতৃবৃন্দ।
ই-বার্তা/জাহিন হাসান