ষাঁড়েকে ভালোবেসে বিয়েই করেননি!
ভারতের তামিলনাড়ুতে সেলভারানি কানাগারাসু (৪৮) নামের এক নারী ষাঁড়ের সেবা-যত্নের জন্য জীবনে বিয়ে করলেন না। ষাঁড়-কে সন্তানের মতোই ভালোবেসে লালন পালন করেন সেলভারানি। খবর বিবিসি।
চাইলেই বিয়ে করে সুখে সংসার করতে পারতেন তিনি। কিন্ত ওই পথে হাঁটেননি। বরং বাবা-দাদার পেশাকেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তামিলনাড়ুর প্রত্যন্ত গ্রামের এই দিনমজুর সেলভারানি কানাগারাসু। তার বয়স যখন খুব অল্প ছিল তখন থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন দাদা এবং বাবার মতো তিনিও একদিন তামিলনাড়ুর বিখ্যাত বুল ফাইটিং জাল্লিকাট্টুতে অংশগ্রহণ করবেন। আর সেই মতো নিজেকে প্রস্তুতও করেছিলেন তিনি। তাই প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় তার কাছে বেশ কিছু বিয়ের প্রস্তাব আসলেও তিনি তা ফিরিয়ে দেন। কারণ তিনি দেখেছিলেন তার ভাই অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় তাদের পারিবারিক এই বিখ্যাত রীতি ধীরেধীরে হারিয়ে যেতে বসেছিল।
বর্তমানে তিনি রামু নামক একটি ১৮ বছরের ষাঁড়কে নিজের পুত্রসম লালনপালন করছেন। রামুকে যখন তিনি তার কাছে নিয়ে আসেন, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। এই আট বছর ধরে রামু সাতবার জাল্লিকাট্টুতে অংশগ্রহণ করেছে এবং তার মধ্যে পাঁচবার বিজয়ী হয়েছে। আর সেই কারণেই রামু এখন তামিলনাড়ুর কিংবদন্তি।
জানা যায়, রামু’র জন্য দরকার পরে আলাদা খাবারের। প্রতিযোগিতায় লড়ার জন্য প্রয়োজন পরে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু দিনে ২০০ রুপি আয় করে সেলভারানি। তিনি বলেন, আমি অনেক সময় দিনে এক বেলা খাই, আর রামু’র খাবারের জন্য রুপি জমাই।
সেলভারানির আত্মীয় ইন্দিরা বলেন, আমরা ১ লাখ রুপি দিয়ে রামুকে কিনতে চেয়েছি, কিন্তু তাকে রাজি করাতে পারিনি। আসলে ভালোবাসা কোন মূল্য দিয়ে কিনা যায় না।
সেলভারানি কানাগারাসু রামুকে নিয়ে বলেছেন “রামু অনেকবার জাল্লিকাট্টুতে পুরস্কার জিতেছে কিন্ত সেটা বড় কথা নয়। আসল কথা হল ও আমাদের পরিবারের বহুকালের হারিয়ে যাওয়া সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছে। তাই ওকে আমি কোন দিন নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারব না। ও এখন আমার কাছে নিজের সন্তানের থেকেও অনেক বড়”।