সার্চ কমিটির নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে
ই-বার্তা ডেস্ক ।। নির্বাচন কমিশন নিয়োগে গঠিত সার্চ কমিটির সদস্যদের আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে নির্মোহভাবে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্রপতি এই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশকৃত তালিকা থেকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ মহান জাতীয় সংসদে পাস হয়। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো সুনির্দিষ্ট আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইনগত বিষয়টি তোয়াক্কা না করে সার্চ কমিটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন। যারা এদেশে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অপরাজনীতির জন্ম দিয়েছিল তাদের প্রতিনিধি হিসেবেই তিনি চিরাচরিতভাবে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। কাদের বলেন, যারা বার বার সংবিধান ও প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মাধ্যমে নিজেদের স্বেচ্ছাচারিতাকে পরিপুষ্ট করেছে এবং এদেশের মানুষের উপর স্বৈরাচারী শাসনের স্টিম রোলার চালিয়েছে তারাই কেবল এ ধরনের আইনি প্রক্রিয়াকে মূল্যহীন বলার মতো ধৃষ্টতা দেখাতে পারে।
বাংলাদেশের জনগণ কোনো গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যকে বরদাস্ত করে না, ষড়যন্ত্রকারীর রক্তচক্ষু ও ত্রাসের কাছে মাথা নত করে না বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বুটের তলায় পিষ্ট করে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র চাপিয়ে দিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করেছিল। একই সঙ্গে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে সংবিধান ও আইনকে ভূ-লুণ্ঠিত করেছিল।তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সে অপরাজনীতির ঐতিহ্য বহন করছে বিএনপি। যার ধারাবাহিকতায় কোনো আইন বা নিয়ম-নীতির কথা শুনলে বিএনপি নেতাদের গায়ে জ্বালা ধরে।
কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- অনুসন্ধান কমিটি ও নির্বাচন কমিশন সবই সরকারের অধীন। অথচ আমরা সকলেই জানি, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। আর অনুসন্ধান কমিটি প্রণীত আইনের অধীন। এই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ২২টি সংশোধনী আনা হয়। বিএনপি সব সময় গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি এবং আইনি কাঠামোর প্রতি নেতিবাচক মনোভব পোষণ করে এবং তারই ধারাবাহিকতায় অনুসন্ধান কমিটিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শুধুমাত্র নিজেদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য জাতিকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবরের ন্যায় নির্লজ্জভাবে এই মিথ্যাচার করে চলেছে। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি উচ্চ আদালত কর্তৃক মীমাংসিত ইস্যু উল্লেখ করে কাদের বলেন, এটি নিয়ে নতুন করে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। দেশের জনগণ, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা উপর বিএনপির কোনো আস্থা নেই বলেই তারা বার বার অসাংবিধানিক পন্থার কথা বলে আসছেন। তারা বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করার মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দুঃস্বপ্নে বিভোর। তাই দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা, নির্বাচনি ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং জনগণের মতামতকে তোয়াক্কা না করার যে ভ্রষ্ট নীতি বিএনপি গ্রহণ করেছে তা গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিপন্থী বলে জানিয়ে কাদের বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত না থেকে জনগণের প্রতি আস্থাশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি দলটিকে। একই সঙ্গে দেশের সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছি।