৩৬৫ দিনের মধ্যে বন্ধ থাকে ২১১দিন: জাবি
ই-বার্তা ডেস্ক ।। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে বন্ধ থাকে ২১১দিন! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হয় মাত্র ১৫৪ দিন! আর একারণেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট বেড়ে চলেছে। বিশ্বাস না হলে চলুন মিলিয়ে নেই হিসাব। ২০১৮-১৯ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত ক্যালেন্ডারই এর বড় প্রমাণ।
চলমান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বর্তমান সেশনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও ধর্মীয় দিবস উপলক্ষে এক দিন করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে ১৭ দিন। ইদ-উল-আযহা উপলক্ষে ১২ দিন, দুর্গাপূজা ও লক্ষীপূজায় ১০ দিন, শীতকালীন ছুটি ৮দিন এবং গ্রীষ্মকালীন, পূর্ণিমা ও ইদুল ফিতর উপলক্ষে ৪০ দিন বন্ধ থাকবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সময় বন্ধ থাকে ১০দিন, বিভিন্ন বিভাগের ট্যুরের জন্য অন্তত ৫দিন এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান উপলক্ষে অন্তত ৫দিন যে কোন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে। আর শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় বছরে ১০৪দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে। এই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আবার অন্যান্য অন্যান্য ভেকেশনের ছুটি বাদ দিলে অল্প কিছুদিনের হিসাব এদিক সেদিক হতে পারে। মোট কথা বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় বন্ধ থাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের আগে জাবি ক্যাম্পাসে সাপ্তাহিক ছুটি ছিল একদিন-শুক্রবার। ওই বছর ১০ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সপ্তাহে দুই দিন একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত পাশ হয়। পরে সমিতির নেতারা সপ্তাহে দুই দিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করে। একই বছর ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় এ দাবি মেনে নেয় প্রশাসন। ওই বছর ডিসেম্বর মাস থেকে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন (শুক্রবার ও শনিবার) কার্যকর হয়।
খোঁজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন কেন এবিষয়ে রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। সান্ধ্যকালীন শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্যই নাকি এমন সুযোগ দেয়া হয়েছে, এমনটাই অভিমত সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩৮টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট মিলে ১৫টিতে রয়েছে সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম। প্রশাসননিক সূত্রে জানা যায়, আরো ১৪টি বিভাগ সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম চালু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের কাছে আবেদন করেছে। কয়েকমাস যাবত শুক্রবার ও শনিবার বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা এমনকি রাত পর্যন্ত সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রামের ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর ফলে এইসব প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সেশনজট তো দূরের কথা বরং নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ক্লাস-পরীক্ষা শেষ হয়। এমনকি ফলাফলও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রকাশিত হয়।
তবে সেশনজট আর ফলাফলে দীর্ঘসূত্রিতা বাড়তেই আছে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের মধ্যে দুটি বিভাগ (বাংলা ও পদার্থবিজ্ঞান) ছাড়া সবকটিতেই রয়েছে কমবেশি সেশনজট। তার মধ্যে অধিকাংশ বিভাগেই রয়েছে অর্ধ বছরের। আর কিছু বিভাগে সেশনজট রয়েছে এক থেকে দেড় বছরের। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সেশনজট কমাতে কোন কার্যকর পদক্ষেপ বা কোন নোটিশ চোখে পড়েনি। এছাড়া সেশনজট কমাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও ব্যর্থতার অভিযোগ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শুধু সাপ্তাহিক দু’দিন ছুটি থাকায় যে সেশনজট বড়ছে এমনটি নয়। সেশনজট বাড়ার অন্যান্য করণও রয়েছে। তবে ইতিমধ্যে সাপ্তাহিক ছুটি একদিন করার কথা উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে
ই-বার্তা / তামান্না আলী প্রিয়া