৬ কেন্দ্রে নৌকা পেল ১৬ ভোট!
ই-বার্তা।। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। নির্বাচনে অধিকাংশ কেন্দ্রেই একটি অথবা দুটি করে ভোট পেয়েছেন।
তবে এভাবে পরাজিত প্রার্থী মুজিবুর রহমান অভিযোগ করছে, এর জন্য দায়ী খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমা।
এদিকে এ্যাডভোকেট আাশুতোষ চাকমা অভিযোগ অস্বীকার করে বিডি২৪লাইভকে জানান, পাহাড়ে জানের ভয় উপেক্ষা করেই বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তিনি নৌকার ভোট চেয়েছেন। কিন্তু কেউ ভোট না দিলে তার কিছু করার নেই।
জানা যায়, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলার বাবুছড়া এবং দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনে বাবুছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হন বাবুছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: মুজিবুর রহমান। নৌকা প্রতীকে তিনি জারুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩ ভোট, নুনছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ ভোট, জারুলছড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ ভোট, ধনপাতা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ ভোট এবং মনোরথ তালুকদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ ভোট পান। ৯টি ভোট কেন্দ্রের অধিকাংশ কেন্দ্রে ১টি, ২টি, ৩টি করে ভোট পান। এর মধ্যে নাড়াইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭ ভোট, বাবুছড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৩ ভোট, নুনছড়ি ডিপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪১ ভোট পান। শুধুমাত্র নিজ ভোট কেন্দ্রে মুজিবুর রহমান নৌকা প্রতীকে ৮শত ২৩ ভোট পান। এই কেন্দ্রে অধিকাংশ ভোটার বাঙ্গালি।
নৌকার ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি থাকলেও এবারের নির্বাচনে উপজাতী অধ্যুষিত এসব ভোট কেন্দ্রে দু’একটি করে ৬ কেন্দ্রে ১৬ টি ভোট পেয়েছে।
তবে এভাবে পরাজয়ের কারণে গত শুক্রবার দুপুরে বাবুছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো: মুজিবুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবী করেন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমার কারণেই তিনি এতো কম ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। কারণ তিনি নৌকার জনসভা করে পেছনে ‘ঢোল’ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তার ফুফাতো ভাই সন্তোষ কুমার চাকমার জন্য ভোট চেয়েছেন।
এছাড়া তিনি নির্বাচনের দুদিন আগে ২৭ মার্চ জারুলছড়ি, ধনপাতা এবং বেলছড়ি গণসংযোগ ও জনসভা করার কথা থাকলেও যথাসময়ে উপস্থিত হননি। পক্ষান্তরে তিনি ওই দিন রাতেই বাবুছড়ার দাদন কার্বারী পাড়া পুলক চাকমার বাড়িতে গোপন বৈঠক করে তার ফুফাত ভাই সন্তোষ কুমার চাকমার জন্য ঢোল প্রতীকে ভোট চেয়েছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমা জানান, নৌকা প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন জায়গায় ভোট চেয়েছি। টাকা দরকার টাকা দিয়েছি, পোস্টার দিয়েছি। ওর প্রচারণার সময় বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য দিয়েছি।
এছাড়া তিনি আরো জানান, এটা স্থানীয় ইলেকশন। আমার তো জানের ভয় আছে। জানের ভয় সবার আছে। কেহ মুখ খুলতে পারে না? দলের বাহিরে ভোট দিলে তাদের নিরাপত্তা দিবে কে?
উল্লখ্য, বাবুছড়া ইউনিয়নে সন্তোষ জীবন চাকমা ঢোল প্রতীকে ২’হাজার ৫শত ১৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উমেশ কান্তি চাকমা চশমা প্রতীকে ১ হাজার ৩শত ৯ ভোট, অনুপম চাকমা মোটর সাইকেল প্রতীকে ১ হাজার ২শত ৭৯ ভোট, বর্তমান সুগত প্রিয় চাকমা আনারস প্রতীকে ৯শত ৩৯ ভোট, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুজিবুর রহমান নৌকা প্রতীকে ৯শত ২৩ ভোট, নিউটন চাকমা ঘোড়া প্রতীকে ৬শত ৬৯ ভোট, পরিতোষ চাকমা অটোরিকশা প্রতীকে ৫শত ৬৮ ভোট পেয়েছেন।
বাবুছড়া ইউনিয়নে মোট ভোটার ১০ হাজার ৪ শত ৬১ ভোটের মধ্যে ৮ হাজার ৩ শত ৯৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
ই-বার্তা/এস