ভালোবাসুন অতিথি পাখিকে
ই-বার্তা ডেস্ক ।। বাংলাদেশের নদনদী, হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল, মোহনা-চরাঞ্চল-দ্বীপ, পুকুর-জলাশয় এখন অতিথি পাখির বিচরণেপরিপূর্ণ।
প্রতিবছর শীত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিথি বা পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। শীত প্রধান দেশের তুষারপাত থেকে বাঁচতে, অস্তিত্ব রক্ষার্থে খাবার ও নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাংলাদেশের মতো কম শীতপ্রধান দেশে অতিথি পাখির আগমন ঘটে।
শীত আর অতিথি পাখি যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশে অতিথি পাখির বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত বহু স্থান রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে শীত মৌসুমে বাংলাদেশে অতিথি পাখি এলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন কারণে অতিথি পাখি আসাটা কমে যাচ্ছে!
এ বছর খুব কমসংখ্যক অতিথি পাখি বাংলাদেশে এসেছে। এসব পরিযায়ী পাখির সাময়িক জীবনযাপনের পক্ষে এখানকার পরিবেশ দিন দিন অনিরাপদ হয়ে উঠছে। অনেকে শখ মেটাতে শীত মৌসুমে অতিথি পাখি শিকারে বের হন।
অনেকে আবার এ মৌসুমটাতে পাখি শিকারকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে। পাখি শিকারীরা গুলি করে (বিশেষ করে এয়ারগান দিয়ে), বিষটোপ ব্যবহার করে, জাল পেতে অতিথি পাখি হত্যায় মেতে ওঠে। শীত মৌসুমে বাজারে সবার সামনে অতিথি পাখি বিক্রিও করতে দেখা যায়। অনেকে আবার রসনাতৃপ্তিতে বাড়িতে পরিযায়ী পাখি কিনে আনে। পাখি শিকার করা মানে নিষ্ঠুরতা ও অমানবিকতার পরিচয় দেওয়া। যে পাখিরা শুধু জীবন ও খাদ্যের সন্ধানে আমাদের মতো দেশে আসে, নিজেদের অসচেতনতা ও লোভের বশবর্তী হয়ে কিছু লোক সেই পাখির জীবন বিনষ্ট করছে বা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করছে। মানুষের এমন অমানবিক আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
অতিথি পাখি প্রকৃতি-পরিবেশের বন্ধু। অতিথি পাখি শুধু জলাশয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, আমাদের উপকারও করে। ফসলের জন্য ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে অতিথি পাখি কৃষককে সহায়তা করে। মানুষের মনের খোরাক বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অতিথি পাখির অবদান রয়েছে। যে দেশে পাখি বেশি, সে দেশে পর্যটকের সংখ্যাও বেশি। এ বছর অতিথি পাখি কম আসার পেছনে মূলত মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডই দায়ী! তাই পাখি রক্ষার্থে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।
ই-বার্তা / তামান্না আলী প্রিয়া