স্ত্রীর পরকীয়ার বলি আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশ  উদ্ধার 

গত ছয়দিন ধরে নিখোঁজ থাকা জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার প্রধান আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের (বাবু সোনা) লাশ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে র‌্যাব রংপুর শহরে রথীশের বাড়ির আধা কিলোমিটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

রথীশের ভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিক সুবল লাশটি তার ভাইয়ের বলে শনাক্ত করেন। রথীশের স্ত্রী দীপাকেও সেখানে নিয়ে গিয়েছিল র‌্যাব।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক মেজর আরমিন রাব্বী ইঙ্গিত দিয়েছেন, দীপার সঙ্গে তার এক সহকর্মী শিক্ষকের সম্পর্কের জেরে রথীশ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যে বাড়িতে রথীশের লাশ পাওয়া গেছে, তা দীপার সহকর্মী তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলামের ভাইয়ের বাড়ি।

দীপাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে মেজর রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, “তার দেওয়া তথ্যেই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।” র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, চার-পাঁচ দিন আগে হত্যার পর লাশটি নির্মাণাধীন বাড়িটিতে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল।

রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকও লাশ উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন।

আগে পরিবারের উদ্যোগে মঙ্গলবার দিনভর রংপুর শহরের বাড়ির পাশের ডোবায় তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে একটি রক্তমাখা শার্ট পাওয়া যায়। নতুন করে পুলিশ আরও দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ নিয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন ছয়জন।

রক্তমাখা শার্ট সম্পর্কে রথীশ চন্দ্রের ছোটভাই সুশান্ত ভৌমিক সুবল বলেন, যে শার্টটি ডোবায় পাওয়া গেছে তাতে রক্তসদৃশ দাগ দেখা গেলেও শার্টটি তার নিখোঁজ দাদা রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের নয়।

তিনি বাড়ি থেকে যে মোটরসাইকেলে পরিচিতজনের সঙ্গে চলে গেছেন এমন কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি। পরিবারের দাবি তিনি সকাল সাড়ে ৬টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন আর তার মোবাইল ফোন ৭টার পর বন্ধ হয়। পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে মোবাইল ফোনসংক্রান্ত যে তথ্য রয়েছে তাতে দেখা যায়, ভোর ৫টার পর থেকে তার মোবাইলের সুইচ বন্ধ ছিল। ফলে সঠিক তথ্য নিয়েও বিভ্রান্তিতে পড়ে পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা।

পরে আবার রাতে ডোবায় তল্লাশি অভিযান পুলিশ স্থগিত রাখার খানিক পর তাজহাটে র‌্যাবের অভিযানে কামরুলের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়িতে একটি লাশ পাওয়ার খবর আসে। সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় দীপাকেও। এরপর লাশ শনাক্ত করা হয়।

রথীশ নিখোঁজ হওয়ার পর সুশান্ত বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। তবে তাতে কাউকে আসামি করা হয়নি।

র‌্যাব কর্মকর্তা রাব্বী সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নে বলেন, তারা তদন্ত শেষ করে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাবেন।

ই-বার্তা/এসএস