সম্রাটের গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার, শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম
ই-বার্তা ডেস্ক।। ‘ক্যাসিনো গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের কাছ থেকে যারা সুযোগ-সুবিধা নিতেন তারা এখন আতঙ্কিত।
তার আস্তানায় এমন একটি নথি পেয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যাতে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম রয়েছে। যে নথিতে প্রতি মাসে তিনি কাকে কত টাকা দিতেন সেই হিসাব আছে। সম্রাটের অন্যতম সহযোগী যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াও ওইসব প্রভাবশালীকে নিয়মিত অর্থ দিয়ে আসছিলেন।
গত রবিবার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পর তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের তিনি ওই প্রভাবশালীদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, প্রতি রাতেই ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজির কোটি কোটি টাকা জমা হতো সম্রাটের দরবারে। সন্ধ্যা হলেই কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনের চতুর্থ তলায় হাজির হতেন তার অপরাধ সাম্রাজের হোতারা। বস্তায় ভরে নিয়ে যেতেন টাকা। প্রতিদিনই এসব টাকা ভাগ-বাটোয়ারা হতো। টাকা নিতে অনেকেই ধরনা দিতেন সম্রাটের দরবারে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি রয়েছেন। তবে কোনো কোনো ব্যক্তিকে মোটা অঙ্কের টাকা পাঠানো হতো মাসের শেষদিকে। টাকা পাঠাতে দেরি হলে তারা নিজেরাও যোগাযোগ করতেন। আওয়ামী লীগের প্রথম সারির কয়েক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে টাকা পাঠানো হতো বিভিন্ন খাতের প্রভাবশালীদের কাছে। এমনকি দেশের বাইরে অবস্থান করা নেতা এবং সন্ত্রাসীদেরও টাকা পাঠাতেন সম্রাট।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর দফায় দফায় সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে নিয়ে কাকরাইলে ভূঁইয়া ম্যানশনে অভিযান চালায় র্যাব। সম্রাটের অফিস ও আস্তানা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি ও আলামত জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের আগে তিনি কীভাবে অপরাধমূলক কর্মকা-ে যুক্ত ছিলেন সেই তথ্য দিয়েছেন।
তিনি দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়মিত অর্থ দিতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোতে অর্থ দিতেন। বিএনপি ও যুবদলের নেতারাও তার কাছ থেকে টাকা নিতেন। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় শীর্ষ কর্মকর্তাকে নিয়মিত ‘মাসোহারা’ দিয়েই ক্যাসিনো কারবার চালিয়ে আসছিলেন।
ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু