আইআইইউসি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, শিক্ষার্থীদের হলছাড়ার নির্দেশ
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।দিনভর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভা এ সিদ্ধান্ত নেয়া নেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নিজাম উদ্দিন।
রাত ৯টার মধ্যে ছাত্রদের আবাসিক হলছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।এদিকে হঠাৎ আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণায় বিপাকে পড়েছে হলে থাকা চার শতাধিক ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির উসমান (রা.) হলের মো. আদনান নামে শরিয়াহ অনুষদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের এক ছাত্রকে শিবির সন্দেহে গত সোমবার রাতে মারধর করেন ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী কয়েক ছাত্র।
পরে শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। এর কিছু দিন আগে ১০ থেকে ১৫ শিক্ষার্থী ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন। ভাঙচুর করা হয় বিভাগের কার্যালয়।
তাদের মধ্যে কয়েকজন বিগত দিনে কিছু বিষয়ের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়েও তাদের উত্তীর্ণ করানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিয়ে আসছিল বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে এসব ঘটনার জেরে শিক্ষকরা ব্যানার- ফেস্টুন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে মানববন্ধন করেন।
পরে বেলা পৌনে ১টার কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে শিক্ষকদের স্মারকলিপি দেয়ার জন্য জড়ো হন বেশ কিছু শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের ওপর ছাত্রলীগের কয়েজন হামলা চালান।
এ ঘটনায় বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির নোটিশ বোর্ডে রেজিস্ট্রার কর্নেল (অব.) মো. কাশেম স্বাক্ষরিত দুটি নোটিশ টাঙানো হয়।
নোটিশের একটিতে লেখা রয়েছে– অনিবার্য কারণবশত পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হলো। আর দ্বিতীয় নোটিশে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
রেজিস্ট্রার কর্নেল (অব.) মো. কাশেম বলেন, বেলা ৩টায় সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়। সভায় কয়েকটি ঘটনা আলোচনা হয়। এর মধ্যে ইইই বিভাগের কার্যালয় ভাঙচুর, শিক্ষক লাঞ্ছিত ও গত সোমবার শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা আলোচনা হয়েছে।
সভা চলাকালীন শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে স্মারকলিপি দিয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় হল ও শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।