অব্যাহত দখলে মরছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ২৪শে মার্চ ২০১৭, শুক্রবার
| রাত ০৯:৩৬
বিশেষ প্রতিবেদন
আশিক ইকবাল : অব্যাহত দখল ও দুষণের মুখে মরতে বসেছে রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরের বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল। হাজারীবাগের ঝাউচর থেকে পুরাতন ঢাকার সোয়ারিঘাট পর্যন্ত এর দুই তীর দখল করে ইতোমধ্যে শিল্পকারখানা, আবাসিক এলাকাসহ অনেক বস্তি গড়ে উঠায় এখন অনেকটা মৃত নালার মত হয়ে গেছে এক সময়ের প্রমত্তা ও গভীর নদটি।
রাজধানি ঢাকার অধিকাংশ সুয়ারেজ লাইনের গেট এখানে এসে মিশলেও শিল্প প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ির বর্জ্য ও ইট, বালু, পাথর ফেলে ভরাট করায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সুইজ গেট গুলো। ফলে শুকনো মৌসুমেও জলাবদ্ধতাসহ ময়লা আবর্জনার বিকট দুর্গন্ধে দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে কামরাঙ্গীরচর এলাকাবাসীর স্বাভাবিক জীবন।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাজারীবাগের ঝাঁউচর থেকে কামরাঙ্গীরচরের সেকশন এলাকা পর্যন্ত নদটির প্রস্থ অস্বাভাবিকভাবে ছোট হয়ে গেছে। কোথাও আবার নদীর মাঝ খানে ঘর বানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নদীর দুই পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বড় বড় শিল্প কারখানা। অবশিষ্ট অংশটুকু দখল করতে অবাধে ফেলা হচ্ছে হাজারীবাগের ট্যানারীর বর্জ্যসহ শিল্প কারখানা ও আবাসিক এলাকার বর্জ্য। এতে করে একদিকে যেমন মেরে ফেলা হচ্ছে নদীকে সাথে ট্যানারীর বর্জ্যের গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে এলারকার বাতাস। আবার ময়লা আবর্জনার চাপে সুইজ গেটের মুখ বন্ধ হয়ে পড়ায় ঢাকা শহরের পানি বুড়িগঙ্গায় পাস না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে এই এলাকায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করে।
এলাকাবাসীর দাবি মাত্র দশ বছর আগেও নদী দিয়ে বড় লঞ্চসহ নৌকা চলাচল করত কিন্তু বিগত কয়েক বছরে অবস্থা এমন হয়েছে, যে যেভাবে পারছে দখল করে ঘর বানাচ্ছে। নদীর মাঝখানে অনেকে সাইনবোর্ড বসিয়ে কিংবা বেড়ার ঘর বানিয়ে দখলের পূর্বশর্ত তৈরি করে রাখছে। স্থানীয় বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী মোঃ জমির বলেন, আগে এই নদীর উপর দিয়ে পুরান ঢাকার সদরঘাট থেকে তুরাগ নদ হয়ে গাজীপুরের টঙ্গী পর্যন্ত যাওয়া যেত কিন্তু এখন এমন অবস্থা যে দখলকারী চক্র যেভাবে দখল করা শুরু করেছে তাতে আগামী একবছরের মধ্যে এর অস্থিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে তার দাবি। তার কথার সাথে একই রকমের ক্ষোভ শোনা গেলো স্থানীয় ফল ব্যাবসায়ী মোঃ বাবুর কন্ঠে, তিনি বলেন বহুদিন ধইর্যা দ্যাখতাছি খালী সাংবাদিক আহে আর লেইখ্যা নিয়া যায় ফটো তুলে টেলিভিশনে দেখায় কামের কামতো কিছুই হয়না। অত্যন্ত অনুনয়ের সাথে তিনি বলেন ভাইরে আমগোর জন্নি (জন্য) আপনারা কিছু করেন, আমগোরে বাঁচান। এখানে ময়লা আবর্জনার গন্ধে আর টেকা যায়না।
দখলদার প্রভাবশালী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি। অনেক সময় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগ জানালেও সিটি কর্পোরেশন এসবের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
পরবর্তী খবর অভিযান অব্যাহত