মিছিলের শব্দেরা
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ১৫ই মে ২০১৭, সোমবার
| সন্ধ্যা ০৬:৩৮
গদ্য
মামুন রণবীর
জীবনের পথে ছুটতে ছুটতে শ্রেষ্ঠ সময় থেকে আমরা অনেক দূরে চলে যাই।এই দূরত্ব থেকে যাত্রাপথটা দেখা যায় কিন্তু ফেরা যায়না সেই স্মৃতিকাতর ক্যানভাসে আগের মতো করে। আমরা নিজের মতো করে প্ল্যান করি ওটা করবো,ওপথে হাঁটবো,ওর আঙুলে আঙুল রেখে পাশাপাশি চলবো।কিন্তু কি এক অজানা কারণে চিন্তার সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক যোজন যোজন। চিন্তার সঙ্গে বাস্তবাকে কাছাকাছি আনতে আমরা এমনভাবে জীবনের ট্র্যাকে দৌড়াই যে নিজেকে সময় দেবার সময়টুকুও আমাদের থাকেনা।অনেক ব্যস্ত দুপুর থাকে নিজের খোঁজ নিতে ভুলে যাই।কেমন আছি। গন্তব্যে পৌঁছাবার জন্য আকুল করা ক্যানভাসটাকে ভালোবেসে নিজের কাছ থেকে হারিয়ে যাই। যখন হারাই বিন্দুমাত্র টের পাইনা। যখন টের পাই তখন কেমন যেন ঘোর লাগে। আনমনেই ভেবে ফেলি,এতোগুলো দিন চলে গেল?
ভালো থাকার মুহূর্তগুলো যখন আমাদের কাছে এসে হাজির হয় তখন ততোটা ভালো থাকা হয়ে ওঠেনা যতোটা যত্ন করে ভালো থাকার দেয়ালিকা আঁকে মন। মস্তিষ্কে সাজানো প্রতিটি ভালো থাকার স্কেচ বড্ড ধূসর হয়ে যায়।সময় ফুরাতে থাকে,বেড়ে যায় মায়া।এই মায়াকেই ছায়া করে বুকের ভেতর গোপন এক যন্ত্রণা নিয়ে সামনে চলি।জীবন আমাদেরকে সামনে চলার নির্দেশ দিয়েছে,পেছনে নয়। সামনে চলতে চলতে সর্বদা সামনে থাকার একটা লোভ আমাদের পেয়ে বসে।এই লোভে চড়ে অট্টালিকা বাড়ে,সুখ বাড়েনা।চকচকে গাড়ির চলাচল বাড়ে,খোলা বাতাসে পাঁচ মিনিট হাঁটার ইচ্ছে বাড়েনা। সেলফির সংখ্যা বাড়ে,নীল আকাশ দেখার আকুলতা জাগেনা। নানা বাহুল্যতা আমাদের চারপাশে পসরা সাজায়। আমরা নিজের দোষ নিরপরাধ ভাগ্যের উপর চাপাই। অথচ দায়গুলো ব্যক্তিগত। এই দায় নিয়েও আমাদের চিন্তা করার সময় থাকেনা।মূলত আমরা চিন্তা করতে চাইনা। না চাওয়া কিংবা না পাওয়ার পথে চলতে চলতে অন্যভূবনে চলে যাবার সময় ঘনিয়ে আসে। অথচ জীবনকে ততোটা কাছ থেকে দেখা হয়না যতোটা কাছ থেকে দেখলে একজন মানুষ নিজেকে জগতের অন্যতম সুখী মানুষ হিসেবে অন্তর থেকে দাবী করতে পারে।
মাঝে মাঝে মনে হয় জীবন একটা মিছিল মাত্র।যাতে বিভিন্ন মুহূর্তে বৈচিত্রময় স্লোগান ধরতে হয়।
আগের খবর গল্পঃ আ ধাঁ রে র অ নু ভ ব
পরবর্তী খবর এক অমিমাংশিত রহস্যের নাম ক্রপ সার্কেল