বাংলাদেশের অন্যতম কয়েকটি সিনেমা
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ১লা জুন ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার
| রাত ০৮:২৪
সিনেমা
বিনোদন ডেস্ক ।। আমাদের দেশের সিনেমা শিল্পের ইতিহাস বেশ গৌরবময়। ৬০ থেকে ৮০’র দশক ছিল বাংলা সিনেমার সোনালি যুগ।এ সময়ে বেশ কিছু অসাধারণ সিনেমা নির্মাণ হয়েছে।কিন্তু বাংলা সিনেমার সেই সুদিন আর নেই। মাঝে মাঝে যে ২-১ টি ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে।
কিন্তু বেশিরভাগ সিনেমায় মানের দিক থেকে ভালো না হওয়ায় দর্শকরা হচ্ছেন হল বিমুখ।এ দেশে (প্রাচীন পূর্ববঙ্গ) প্রথম সিনেমা নির্মিত হয় ১৯২৭ সালে।‘সুকুমারি’ নামের সিনেমাটি ছিল স্বল্প দৈর্ঘ্যের নির্বাক ছবি। প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য নির্বাক ছবি ছিল ‘দ্যা লাস্ট কিস’।এটি মুক্তি পায় ১৯৩১ সালে।
১৯৫৭ সালে এসে বাংলা ছবির মোড় ঘুরে যায়।তৈরি হয় বাংলাদেশের প্রথম সবাক সিনেমা ‘মুখ ও মুখোশ’। পরিচালক ছিলেন আব্দুল জব্বার খান। এরপরের ইতিহাস তো আরো গৌরবময়। একে একে তৈরি হয়েছে বহু কালজয়ী সিনেমা।
তিতাস একটি নদীর নামঃ>>>
২০০৭ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের সেরা ১০ টি সিনেমা নিয়ে দুটি তালিকা প্রকাশ করে। ১ টি ছিল চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মতে আর অপরটি দর্শকদের মতামতের উপড়। উভয় ক্ষেত্রে তিতাস একটি নদীর নাম সিনেমাটি ১ম স্থান অধিকার করে।
তিতাস একটি নদীর নাম সিনেমাটির পরিচালক ঋত্বিক ঘটক। ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় ১৫৯ মিনিটের এই সিনেমাটি। স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে আমাদের দেশে আগমন করে এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন তিনি। অদ্বৈত মল্লবর্মনের লেখা বিখ্যাত উপন্যাস ‘তিতাস একটিনদীর নাম’ এর কাহিনী অবলম্বনে এ সিনেমাটি নির্মিত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদী আর তার আশে পাশের মানুষদের বিশেষ করে জেলেদের জীবন যাত্রায় এ সিনেমার উপজীব্য বিষয়। সিনামাটিতে অভিনয় করেছেন গোলাম মুস্তাফা, কবরী চৌধুরী, রোজী সামাদ, প্রবীর মিত্র প্রমুখ। সিনেমাটিতে ঋত্বিক ঘটক নিজেও তিলকচাঁদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
শ্রাবণ মেঘের দিনঃ>>>
শ্রাবণ মেঘের দিন ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। এবং তাঁরই লেখা শ্রাবণ মেঘের দিন উপন্যাস অবলম্বনে নূহাশ চলচ্চিত্রের ব্যানারে ছবিটি নির্মাণ করা হয়।ছবিটিতে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, শাওন, মাহফুজ আহমেদ, আনোয়ারা, ডাঃ এজাজ।
মতি নামের একজনকে গ্রামেরই কুসুম নামের এক মেয়ে মনে মনে ভালবাসে। মতি একজন গায়ক। কুসুমের গলাও বেশ ভালো। ঢাকা থেকে আসা জমিদারের নাতনি ‘শাহানা’কে ভালবেসে ফেলে মতি গায়ক। এদিকে কুসুমেরও বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। তারপর কী ঘটে জানতে হলে দেখতে হবে পুরো সিনেমাটিই।
এ সিনেমাটি ৬ টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেয়। এ সিনেমাটিই বহুদিন পর হলবিমুখ বাংলাদেশের দর্শকদের হলে টেনে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল।
মাটির ময়নাঃ>>>
মাটির ময়না বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কিত একটি চলচ্চিত্র। এটি ২০০২ সালে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পায়।এ সিনেমার কাহিনী লেখা থেকে শুরু করে চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা করেন তারেক মাসুদ। প্রযোজক ছিলেন তারই স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ। অভিনয়ে ছিলেন নুরুল ইসলাম বাবুল, রোকেয়া প্রাচী, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশে চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করা হয়। পরবর্তীতে বহিষ্কারাদেশ বাতিল হবার পর ২০০৫ সালে ১৬ এপ্রিলে লেজার ভিশন কর্তৃক চলচ্চিত্রটির ভিসিডি এবং ডিভিডি সংস্করণ মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে "শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র" বিভাগে একাডেমি পুরস্কার প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বাংলাদেশের মনোনয়ন লাভ করে।মাটির ময়না প্রথম বাংলাদেশি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র যা কান ফিল্ম ফেস্টিভালের জন্য মনোনীত হয়।
জীবন থেকে নেয়াঃ>>>
জীবন থেকে নেয়া একটি বাংলা চলচ্চিত্র। জহির রায়হান এর নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি ১৯৭০ সালের এপ্রিল মুক্তি পায়।সামাজিক এই চলচ্চিত্রে তৎকালীন বাঙালি স্বাধীনতা আন্দোলনকে রূপকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন রাজ্জাক, সুচন্দা, রোজী সামাদ, খান আতাউর রহমান, রওশন জামিল, আনোয়ার হোসেন, প্রমুখ।
এই ছবিতে আমার সোনার বাংলা গানটি চিত্রায়িত হয়েছিল, যা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
প্রথমবারের মত কোন সিনেমাতে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি দেখানো হয়।জীবন থেকে নেয়া ছবির সংগীত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক ও সংগীত শিল্পী খান আতাউর রহমান এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর রবীন্দ্র সংগীত ও কাজী নজরুল ইসলাম এর নজরুল সংগীত থেকে কয়েকটি বিখ্যাত গান গল্পের প্রয়োজনে নেয়া হয়েছিল।
ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক, সুচন্দা, রোজী সামাদ, খান আতাউর রহমান, রওশন জামিল, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আগের খবর মন ভালো করার পাঁচ সিনেমা
পরবর্তী খবর ছদ্মনামে পরিচিত যে সকল তারকারা