বাংলা চলচ্চিত্রের বাবারা
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ১৮ই জুন ২০১৭, রবিবার
| বিকাল ০৪:৩১
সিনেমা
ই-বার্তা বিনোদন ডেস্ক।। দুই বাংলার চলচ্চিত্রে বাবাকে নানাভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে। বাংলাদেশে নির্মিত অনেক সিনেমাতেই চিত্রনাট্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাবার চরিত্র। এক সময় পর্দায় দাপুটে বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফতেহ লোহানী, খলিল, গোলাম মুস্তাফা, দারাশিকো, আবদুল মতিন। আদর্শবাদী বাবার ভূমিকায় মানানসই ছিলেন আনোয়ার হোসেন ও প্রবীর মিত্র।পরবর্তীতে রাজীব, আহমদ শরীফ খলনায়ক থেকে রাগী বাবার ভূমিকায় দর্শকপ্রিয়তা পান।
পশ্চিমবঙ্গে দাপুটে ও রাশভারী বাবার ভূমিকায় ছবি বিশ্বাস, কমল মিত্র, উৎপল দত্ত ছিলেন অপ্রতিদ্ধন্দ্বী স্নেহময় বাবার ভূমিকায় মানানসই ছিলেন পাহাড়ী স্যান্যাল, কালী ব্যানার্জি। পরবর্তীতে দীপংকর দে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়, অনীল চট্টোপাধ্যায়, বাবার ভূমিকায় সার্থক অভিনয় করেছেন।
এ ছাড়া বাংলা চলচ্চিত্রে বাবা-ছেলের ভূমিকায় দ্বৈত অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার, রাজ্জাকসহ, অনেক অভিনেতা। আবার বাস্তবজীবনে বাবা ও সন্তান চলচ্চিত্রে এসেছেন এমনও বিরল নয়।
এদিকে বাবাকেন্দ্রিক সিনেমার প্রসঙ্গে প্রথমেই মনে পড়ছে বাবা কেন চাকর সিনেমাটির নাম। এখানে আদর্শবাদী এবং বৃদ্ধ বয়সে সন্তান দ্বারা নিপীড়িত বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটি ব্যবসাসফল হয়। ছবিটির পরিচালক ছিলেন রাজ্জাক এবং প্রযোজনায় ছিল রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন।
জন্ম থেকে জ্বলছি সিনেমায় স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন বুলবুল আহমেদ একক বাবা হিসেবে শিশু সন্তানকে বড় করে তোলেন। সিনেমাটিতে বাবা-সন্তানের বেশ কিছু আবেগঘন দৃশ্য রয়েছে। এ ছবির বাবা বলে গেল গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায় আশির দশকে।
আশির দশকে আগুন ছবিতে বাবা-ছেলের দ্বৈত ভূমিকায় ছিলেন রাজ্জাক। বাবা ও ছেলের কণ্ঠে মুন্না আমার লক্ষ্মী সোনা গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায় সেসময়।
নয়নের আলো ছবিতে আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান আশির দশকে লোকের মুখে মুখে ফিরত। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর আর পর্দায় ছিলেন প্রয়াত জাফর ইকবাল।
দীপু নাম্বার টু সিনেমায় একক বাবা বুলবুল আহমেদের সঙ্গে তার সন্তানের সম্পর্ককে তুলে ধরা হয়েছে। জাফর ইকবালের জনপ্রিয় কিশোর ক্ল্যাসিক অবলম্বনে নির্মিত ছবিটি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে।
বাংলাদেশে নির্মিত বাবাকেন্দ্রিক সিনেমার মধ্যে ক্ল্যাসিক হল দ্য ফাদার। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটির কাহিনীও অত্যন্ত ব্যতিক্রমী। বিদেশি নাগরিক শ্বেতাঙ্গ জন বাংলাদেশের একটি শিশুকে পিতৃস্নেহে লালন-পালন করেন। শিশুর নাম দেন তিনি খুকু। খুকু বড় হয়ে উঠলেও খুকুর শ্বশুর বাড়িতে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেখা দেয় দ্বন্দ্ব। সুপার হিট এ ছবিতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত আয় খুকু আয় গানটি দারুণভাবে ব্যবহার করা হয়।
অন্যদিকে ওপার বাংলায় রোমান্টিক নায়ক হিসেবে খ্যাতির শীর্ষে থাকার সময় দরিদ্র ও অসহায় বাবার ভূমিকায় মর্মস্পর্শী অভিনয় করে দর্শককে আলোড়িত করেন উত্তম কুমার খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন সিনেমায়। রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত ছোটগল্পে দরিদ্র রাইচরণের ভূমিকায় উত্তম কুমারের অভিনয় আজও বাংলা চলচ্চিত্রের স্মরণীয় অধ্যায়।
ই-বার্তা/ এমএফএইচ
আগের খবর প্রকাশ পেলো রাজনীতি ছবির গান