পাঁচ মাসে ৪৮ পাঁচ বছরে শতাধিক গুম-খুন


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৬ই জুলাই ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার  | বিকাল ০৪:২৬ অপরাধ

ই-বার্তা ।। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বাংলাদেশের গুম খুন নিয়ে এর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এতে বলা হয়েছে ২০১৭ সালের প্রথম পাঁচ মাসে এরকম ৪৮জনের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদন অভিযোগ করা হয় বাংলাদেশে ২০১৩ সাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শত শত মানুষকে অবৈধভাবে আটক করেছে এবং গোপন স্থানে আটকে রেখেছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপন আটক আর গুমের মধ্যে কয়েকজন বিরোধী নেতাও রয়েছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ওই প্রতিবেদনে অবিলম্বে এই প্রবণতা বন্ধ করে এসব অভিযোগের তদন্ত করা, নিখোঁজদের পরিবারের কাছে ব্যাখ্যা তুলে ধরা আর এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে। খবর বিবিসি।

৮২ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয় , তিনি আমাদের কাছে নেই: বাংলাদেশে গোপন আটক আর গুম।

প্রতিবেদনটিতে অন্তত ৯০ জনের তথ্য রয়েছে, যাদের শুধুমাত্র ২০১৬ সালেই গুম করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগকে এক সপ্তাহ বা একমাস গোপন স্থানে আটকে রাখার পর আদালতে হাজির করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কাছে তথ্য রয়েছে যে, এরকম আটক ২১জনকে পরে হত্যা করা হয়েছে আর ৯ জনের কোন তথ্যই আর জানা যায়নি।

এই ৯০ জনের তালিকায় মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া তিন বিরোধী নেতার তিন সন্তান রয়েছে, যাদের একজন ছয়মাস পরে ফিরে এসেছেন। বাকি তিনজনের এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

সংস্থাটির এশিয়া পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকলেও, বাংলাদেশের সরকার এই বিষয়ে আইনের খুব একটা তোয়াক্কা করছে না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিএনপির ১৯জন কর্মীর তথ্য রয়েছে, যাদের ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের পূর্বে বিভিন্ন এলাকা থেকে তুলে নেয়া হয়।

প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে নিখোঁজ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ একশ জনের বেশি মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছে সংস্থাটি। সেখানে পুলিশের কাছে করা অভিযোগ ও অন্যান্য আইনি কাগজপত্রও রয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলেও তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ।

এ ধরনের ঘটনায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এবং ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, এ ধরনের আটকের ঘটনা সবসময়ে অস্বীকার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তারাও তাদের এই দাবির সমর্থন দিয়ে আসছেন। বরং কখনো কখনো উল্টো বলা হয় যে, এসব ব্যক্তিরা নিজেরাই লুকিয়ে রয়েছেন।

সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগও গ্রহণ করে না পুলিশ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে এসব অভিযোগ তদন্ত করার আহবান জানানো এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কর্মকর্তা ব্রাড অ্যাডামস বলেন, বাংলাদেশের সরকার এসব অভিযোগ নাকচ না করে নীরব থাকছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও চুপ করে থাকছে।তার মতে, এই নীরবতার অবসান হওয়া উচিত।

সর্বশেষ সংবাদ

অপরাধ এর আরও সংবাদ