জলাবদ্ধতায় নাকাল ঢাকাবাসী
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ২৪শে এপ্রিল ২০১৭, সোমবার
| বিকাল ০৪:২৯
রাজধানী
ই-বার্তা ডেস্ক।। বৈশাখে কাল-বৈশাখী তো থাকবেই, তাই বলে ঘোর বর্ষা, এ যেন নিজেই নিজেকে আমন্ত্রণ করে নেয়া অতিথি। হঠাত করে এই অনবরত বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষ চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। বিশেষত ঢাকাবাসীদের জন্য এই বিড়ম্বনা অনেকটাই বেশি।
ঢাকা শহরে বর্তমানে কোটি লোকের বাস। জলাবদ্ধতা এই কোটি মানুষের জন্য আজ এক বিরাট সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। রাজধানীতে চলতি মাসে প্রবল বর্ষণ হয়েছে। কোনো কোনো সড়কে জমে গেছে হাঁটু সমান পানি। মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়েছে ঢাকার ভাঙ্গাচোরা রাস্তা-ঘাট। ভাঙাচোরা সড়কে হাঁটু সমান পানিতে নগরবাসী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বৃষ্টির সময় এবং পরে এইসব সড়কে চলাচলের সময় রিকশা উল্টে দুর্ঘটনার খবরও জানা গেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে অল্প বৃষ্টিপাত হলেই রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে যায় এবং রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। এই পানি সহজে কমতেও চায়না। ফুটপাত আর রাস্তা পানিতে একাকার হয়ে মানুষ রাস্তায় নামতে পারেন না। ফলে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়ে তীব্র যানজট লেগে যায়। পাশাপাশি নিচু এলাকাগুলোতে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুধু ঐ জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ নয়, বরং গোটা রাজধানীর জনজীবন থেমে যায়। গত কয়েক দিনে ঢাকায় যে বৃষ্টি হয়েছে তাতে ঢাকার জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে বিভিন্ন জায়গায়। অনেক বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়েছে। অথচ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে এই বৃষ্টিপাতে এমন জলাবদ্ধতা হওয়ার কথা নয়।
রাজধানীতে সামান্য বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণের মধ্যে উল্লেখ করা যায় বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঢাকা সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়েই যত্রতত্র এভাবে রাস্তা খনন করায় রাস্তাঘাটের বেহাল দশা হয়েছে।
এক সময় ঢাকা নগরীতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এই প্রাকৃতিক খাল-বিল-ঝিল দখল ও ভরাট হতে থাকায় পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, আসছে বর্ষায় রাজধানীর রাজপথ পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রায় ২২টি খাল ভরাট করা হয়েছে বিগত কয়েক বছরে। কোথাও বাড়ি-ঘর-বস্তি কোথাও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আবার কোথাও রাস্তা নির্মাণ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খালের স্বাভাবিক গতিপথ। এছাড়া নগরীর নিচু এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট নির্মিত হওয়ায় প্রাকৃতিক নিয়মে পানি যাওয়ার আর কোনো উপায় নেই।
জলাবদ্ধতার কারণগুলো যেহেতু অজ্ঞাত নয়, সেহেতু এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার পদক্ষেপ নেওয়াও কঠিন নয়। পরিকল্পিত উপায়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। নাহলে স্বপ্নের এই ঢাকা শহরের ভবিষ্যত দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে। রাজধানীর কোনো নাগরিকের তা কাম্য নয়।
আগের খবর মদ খেয়ে বিল না দেওয়ার পিটিয়ে হত্যা
পরবর্তী খবর পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু