চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ, চিকিৎসা ও প্রতিকার


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২৩শে মে ২০১৭, মঙ্গলবার  | বিকাল ০৩:০৪ মেডিসিন

আফিফা মোহসিনা অরণি।। সম্প্রতি ঢাকায় চিকুনগুনিয়া আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই ভাইরাসে। প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে অনেকেই ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এই মূহুর্তে প্রয়োজন জনগণের সাবধানতা এবং সচেতনতা। একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচা যাবে। চলুন জেনে নেই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস কি, এর উপসর্গ, এর চিকিৎসা এবং এর থেকে প্রতিকার পাওয়ার উপায়।

চিকুনগুনিয়া-
চিকুনগুনিয়া ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। এডিস মশার দুইটি প্রজাতি এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবপ্টিকাসের কামড়ে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। এই ভাইরাস বহনকারী মশা দিনের বেলা কামড়ায়। এরা একবারে একের অধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পছন্দ করে। ডিম পাড়ার পূর্বে তিন দিনের বিশ্রামের প্রয়োজন হয় এই মশার।এদের ডিমগুলো পানিতে এক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
মানুষ ছাড়াও বানর, পাখি, তীক্ষ্ণ দাঁত যুক্ত প্রাণী যেমন ইঁদুরে এই ভাইরাসের জীবনচক্র বিদ্যমান। এই রোগে মৃত্যু ঝুঁকি প্রতি দশ হাজারে এক জন বা এর চেয়েও কম। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগের জটিলতা তুলনামূলক বেশি হয়।

উপসর্গ-
ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই থেকে চার দিনের মধ্যে এর উপসর্গ দেখা দেয়। আকস্মিক উচ্চমাত্রার জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা ও গোটা শরীরে ফুসকুড়ি নিয়ে শুরু হয় চিকুনগুনিয়া রোগের উপসর্গ যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর পর্যন্ত স্থায়ী থাকতে পারে। অনেকসময় ফুসকুড়ি রোগের শুরুতেই দেখা দেয় আবার অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে রোগ শুরু হওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর জ্বর কমতে শুরু করলে ফুসকুড়ি উঠেছে। এছাড়া অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেটব্যথা, আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা, জয়েন্টে প্রদাহ ইত্যাদি। অনেক সময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। সাধারণত ৭২-৯৭% রোগীর ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেয়।

চিকিৎসা-
এই রোগের বিরুদ্ধে কার্যকরী অনুমোদিত কোনো টিকা নেই। তবে রোগীকে সুষ্ঠু পরিচর্যায় রাখতে হবে।
১। রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে।
২। প্রচুর পরিমাণ পানি এবং তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।
৩। জ্বর ও ব্যাথার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
৪। ব্যাথানাশক ও এন্টিবায়োটিক ওষুধ না খাওয়াই শ্রেয়।
৫। রোগীকে মশারীর ভেতর রাখতে হবে যাতে রোগীর মাধ্যমে সুস্থ ব্যক্তিতে এই রোগ না পৌঁছায়।

প্রতিরোধ-
সচেতনতাই পারে এই রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে। যেমন,
১। মশা নিয়ন্ত্রণ ও ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো।
২। লম্বা হাতলযুক্ত জামা ও ট্রাউজার পরে থাকা এবং
৩। বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে না দেয়া।

সর্বশেষ সংবাদ

মেডিসিন এর আরও সংবাদ