পাহাড় ধসের কারণ জানাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০১৭, রবিবার
| বিকাল ০৩:১৩
বিশেষ প্রতিবেদন
ই-বার্তা।। জিয়াউল হক, রাঙামাটি॥ রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের কারণ ও পারিপাশির্কতার সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বার্ষিক স্টাডি ট্যুর করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ৪০ শিক্ষার্থী। রাঙামাটির বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এই শিক্ষার্থীরা। ২০-২৩ সেপ্টম্বর থেকে এ ট্যুরের নেতৃত্বে ছিলেন বিভাগের ২ জন শিক্ষক।
প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ বিভাগের অধ্যাপক মো. আবু তৈয়ব চৌধুরী। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইকবাল সরোয়ার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইকবাল সরোয়ার বলেন, আমরা পত্র পত্রিকায় ও টিভিতে যা দেখেছি তার চেয়েও ভয়াভহ পাহাড় ধস হয়েছে। একে ভয়াবহ পাহাড় ধস বলা চলে। আমরা মূলত: পাহাড় ধসের দুটি কারণকে মূল হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছি। একটি হলো প্রাকৃতিক, অন্যটি মানুষ সৃষ্ট। প্রচুর বৃষ্টিপাতের আগে এই এলাকায় কিছু ভূমিকম্প হয়েছিল, এসব কারনে মাটি নরম হয়ে গিয়েছিল। আর জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে গাছ কেটে বসতি নির্মাণ ও পাহাড়ে জুম চাষের ফলে মাটি আলগা হওয়াটাও কারণ হিসাবে আমরা দেখতে পেরেছি। আর রাঙামাটিতে আগামী বছর এমন বৃষ্টিপাত হবে না সেটা কেউ বলতে পারবে না। শহর গঠনের ক্ষেত্রে অপরিকল্পিত গড়ে উঠার কারণে কাপ্তাই হ্রদে দিন দিন দূষন ও দখলের হার বাড়ছে। শহর গঠনের ক্ষেত্রে এখনও
কোন পরিকল্পনা কোন বিভাগের নেই বলে আমাদের মনে হয়েছে। এখন থেকে যে কোন নতুন কিছু তৈরির ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিকল্পনা করে নিয়েই করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. আবু তৈয়ব চৌধূরী বলেন, আমরা গত বুধবার ২০ সেপ্টম্বর থেকে প্রায় ২০-২৫ ক্ষতিগ্রস্ত ঘুরে দেখেছি। সড়কে কি পরিমাণ ভারি গাড়ি চলাচল করে, সেটা সড়ক বিভাগের লোকজন জানে না। ভারি যানচলাচলের জন্য মাটি কাঁপনের সৃষ্টি করে আর অতিমাত্রার বৃষ্টির কারণে মাটি আলগা হওয়ার কারণে রাস্তার পাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে পাহাড় ধসের অন্যতম কারন বলে মনে হয়েছে। তাই এখন যাই করা হউক না কেনো, একজন পারদর্শী এনে তারপর নতুন করে শহরের অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে, না হলে আবারো এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
শনিবার রাঙামাটি ত্যাগ করার পূর্বে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধূরীর সাথে মত বিনিময় করেন এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মেয়র বলেন, কি কারনে হলো? ভবিষ্যতে এর থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় কি? সেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টার কথা শুনলাম। আমরাও তাদের মতামতের সাথে একমত পোষন করছি। যদি ভবিষ্যতে ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে এর চেয়ে বড় সমস্যা হতে পারে এবং পার্বত্য এলাকা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ এনে যদি নতুনভাবে রাস্তাগুলো করা হয়, তাহলেই ভবিষ্যতের বড় বিপর্যয় থেকে শহরের মানুষকে রক্ষা করা যাবে।
পরবর্তী খবর মিয়ানমারে ফিরতে চায় না রোহিঙ্গারা