লিবিয়ায় দাস বাজারের সন্ধান, বিক্রিয় হচ্ছে শরণার্থী


ই-র্বাতা প্রকাশিত: ১২ই এপ্রিল ২০১৭, বুধবার  | দুপুর ০১:১৮ মধ্যপ্রাচ্য

লিবিয়ায় দাস বাজারের সন্ধান, সেখানে হাজার হাজার আফ্রিকান শরণার্থীদের’ কেনা-বেচা হয়। পরে তাদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, জোরপূর্বক শ্রম ও যৌন নির্যাতন করা হয়। ওই দাসত্বের কবল থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিরা জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনকে (আইওএম) এসব কথা জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
মঙ্গলবার আইওএম জানায়, তারা বেশ কয়েকজন পশ্চিম আফ্রিকান শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলেছে। ওই ভুক্তভোগীরা জানান, লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সাবহায় বহু শরণার্থীকে নিয়ে এসে গ্যারেজ বা পার্কিং করার স্থানে দাস বাজারে বিক্রি করা হয়।

লিবিয়ায় আইওএম-এর প্রধান ওসমান বেলবেইসি জানিয়েছেন, ওই শরণার্থীদের দুই থেকে তিন মাসের জন্য ২০০ থেকে ৫০০ ডলারে বিক্রি করা হয়। পরে আবারও তাদের হাত বদল হয়। কর্মসামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে তাদের দাম নির্ধারণ করা হয়। মুক্তিপণের অর্থ না দিতে পারলে, তাদের জোরপূর্বক শ্রম ও যৌন ব্যবসায় কাজ করতে বাধ্য করা হয়।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাহারা অঞ্চলের কয়েক শতাধিক তরুণকে তথাকথিত দাস বাজার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সেনেগালের এক অভিবাসী জানিয়েছেন, দক্ষিণ লিবিয়ার শহর সাবহাতে এমনই একটি দাস বাজারে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। এর আগে তাকে শতাধিক অভিবাসীসহ একটি খাঁচার ভেতরে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। বন্দী অভিবাসীদেরকে মুক্তিপণের জন্য তাদের স্বজনদের কাছে ফোন করার কথা বলতো অপহরণকারীরা। তাদেরকে যে নির্যাতন করা হচ্ছে সেটি শোনানোর জন্য ফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সময়, অনেক অভিবাসীকে প্রহার করতো অপহরণকারীরা।
তিনি জানান, ওই শরণার্থীদের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে বন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে হতো। সেখানে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্য ছিল একেবারেই কম। যারা মুক্তিপণের অর্থ দিতে পারতো না, হয় তাদেরকে মেরে ফেলা হতো, নয়তো অনাহারে রাখা হতো।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, নারীদেরকে লিবিয়ার ধনীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হতো। তাদেরকে যৌনদাসী হিসেবে জীবনযাপনে বাধ্য করা হতো।
আইওএম জানিয়েছে, নাইজেরিয়া, সেনেগাল ও গাম্বিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি শরণার্থীকে বন্দি করা হয়। তারা অপুষ্টিতে ভোগে কঠোর শ্রম ও যৌন নির্যাতনের শিকারই শুরু হন না। তাদের হত্যাও করা হয়। গত বছর একই মাসে অন্তত ১৪ জন বন্দি শরণার্থী নিহত হয়েছিল বলে জানিয়েছে আইওএম।
উল্লেখ্য, আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার মূল পথ লিবিয়া ওপর দিয়ে যায়। গত তিন বছরে এ পথে গড়ে দেড় লাখ মানুষ ইউরোপে পারি জমিয়েছে।
সূত্র,এসএ

সর্বশেষ সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্য এর আরও সংবাদ