আজকের হেলথ টিপস- মাথার খুলির যত্ন
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ৯ই নভেম্বর ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার
| বিকাল ০৩:০০
মেডিকেল
আমাদের পুরো মাথাজুড়েই রয়েছে খুলি। মাথার খুলি হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত। মস্তিষ্ককে নিরাপদ রাখা ও বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করাই এর প্রধান কাজ। ভ্রুণাবস্থাতেই মাথার খুলি তৈরি হয়। তবে তা ভীষণ নরম ও দুর্বল থাকে। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর এটা কিছুটা শক্ত হয়। শিশু যত বড় হতে থাকে, খুলিও তত শক্ত হয়।
মাথার খুলিকে ইংরেজিতে বলে স্কাল আর খুলির ওপরের অংশকে বলে ভল্ট। খুলির ওপরের অংশ, কানের দুই পাশে আড়াআড়িভাবে খাঁজ কাটা দাগ থাকে। জন্মের সময় (নরমাল ডেলিভারি) এই খাঁজগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে একটা হাড়ের ওপর অন্য একটা হাড় উঠে মাথাটা ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসে। গর্ভস্থ শিশুর শরীরের তুলনায় তার মাথা অনেক বড় থাকে। খুলিটা ছোট হওয়ার জন্যই প্রাকৃতিকভাবে সন্তান প্রসবে সুবিধা হয়। তা না হলে মাকে আরও বেশি কষ্ট পেতে হতো। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া বাচ্চাদের মাথার হাড় এভাবে ছোট হয় না।
শরীরের গঠন, উচ্চতা ও বয়সভেদে একেকজনের মাথার খুলি একেক রকম হয়। মেয়েদের খুলি গোলাকার আর তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। ছেলেদের ঘাড়ের হাড় চওড়া হওয়ার জন্য তাদের খুলি বড় ও লম্বা হয়। মাথার খুলির আকৃতির সঙ্গে বুদ্ধিমত্তার কোনো সম্পর্ক নেই। স্কালের সঙ্গে ছোট ও নরম হাড়গুলো সংযুক্ত থাকে। আর স্কালের নিচের দিকে মুখের দুই পাটির হাড়ের ওপরের অংশ লাগানো থাকে। এ দুই পাটির হাড়ে দাঁত থাকে। খুলি মস্তিষ্কের টুপির মতো কাজ করে। তাই একে মস্তিষ্কের হেলমেটও বলা যায়। খুলির নিচের দিকে গোলাকার ছোট একটি ছিদ্র রয়েছে। এই ছিদ্রকে বলে ফোরামেন ম্যাগনাম। এই ছিদ্র দিয়ে
স্পাইনাল কর্ডসহ বিভিন্ন স্নায়ু মস্তিষ্ক থেকে ঘাড় বেয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে গেছে। পূর্ণবয়স্ক হলে মাথার খুলি বেশ শক্ত হয়ে যায়।
মাথার খুলির যত্ন-
- নবজাতকের মাথা অনেক দিন পর্যন্ত খুব দুর্বল থাকে। মাথার সঠিক আকৃতির জন্য তাকে নরম বালিশে শোয়ান।
- খেলার ছলে বা রাগের মাথায় কখনোই কারও মাথায় আঘাত করবেন না। মানুষের মস্তিষ্ক জুড়েই রয়েছে মাকড়সার জালের মতো বিছানো বিভিন্ন স্নায়ু। এসব স্নায়ু ভীষণ সংবেদনশীল। হঠাৎ কোনো স্নায়ু আঘাত পেলে স্থায়ী মানসিক রোগ হয়ে যেতে পারে। আর স্নায়ু ছিঁড়ে গেলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অথবা প্যারালাইসিস হতে পারে। প্যারালাইসিস দেহের এক পাশে বা উভয় পাশে হতে পারে।
- মোটরসাইকেল চালানোর সময় অবশ্যই হেলমেট ব্যবহার করবেন।
- হাড়ের গঠন ঠিক রাখার জন্য ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাবেন।
- হরমোন বৃদ্ধিকরণ, গর্ভনিরোধক ওষুধ অনেক সময় হাড়ের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এসব ওষুধ খাবেন না।
- বালিশ ছাড়া অথবা পাতলা বালিশে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। এতে মাথা থেকে ঘাড় ও দেহের সর্বত্র সঠিকভাবে রক্ত চলাচল করবে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে।
- প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। মৌসুমি ফল ও শাকসবজি খান।
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হাড়ের জন্য ভিটামিন ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল খাবেন না। ছোট মাছের হাড় চোখের জন্য উপকারী। তাই নিয়মিত ছোট মাছ খান।
ডাঃ ফারহানা মোবিন
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা।
এম.পি.এইচ, সিসিডি (বারডেম হাসপাতাল)
সি-কার্ড (ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন)
কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট (কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন)
পরবর্তী খবর আজকের হেলথ টিপস- মস্তিষ্কের যত্ন