আজকের হেলথ টিপস- অস্থিসন্ধির যত্ন নিন


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১২ই নভেম্বর ২০১৭, রবিবার  | দুপুর ১২:১৪ মেডিকেল

হাঁটুর হাড়ের গাঁথুনি-
আমাদের শরীরে ২০৬টি হাড় রয়েছে। এই হাড়গুলো বিভিন্ন বন্ধনী দিয়ে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। শরীরের যে স্থানে দুটো হাড় বা অস্থি একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাকে বলে অস্থিসন্ধি বা হাড়ের গাঁথুনি বা হাড়ের সংযুক্তি। আমাদের শরীরে এমন অসংখ্য হাড় আছে। এই হাড়গুলোর মধ্যে অস্থিবন্ধনী রয়েছে। অস্থি, মাংসপেশি ও লিগামেন্ট দিয়ে অস্থিবন্ধনী তৈরি হয়। লিগামেন্ট কিছুটা স্থিতিস্থাপকতাসমৃদ্ধ, ভীষণ শক্ত, সাদা বর্ণের বিশেষ ধরনের মাংসপেশি। এটি হাড়ের গাঁথুনিতে শক্ত রশির মতো কাজ করে। হাড়, লিগামেন্ট, মাংসপেশি থাকার জন্যই অস্থিসন্ধিতে হাড় শক্তভাবে লেগে থাকে। আমাদের শরীরে অনেক অস্থিসন্ধি রয়েছে। যেমন হাঁটুর অস্থিসন্ধি, ঘাড়ের সন্ধি, কোমরের অস্থিসন্ধি ইত্যাদি। গঠনপ্রকৃতি অনুযায়ী অস্থিসন্ধিগুলো তিন ধরনের। তন্তুময়, তরুণাস্থিময়, সাইনোভিয়াল। হাঁটুর অস্থিসন্ধিকে বলে সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি। আমাদের হাঁটুতে লম্বা তিনটি হাড় এবং প্যাটেলা নামের গোলাকার হাড় রয়েছে। এই চারটি হাড় হাঁটুতে অস্থিসন্ধির মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে।
অস্থিসন্ধিতে এই অস্থি চারটি লিগামেন্ট দিয়ে শক্তভাবে আবদ্ধ। দুটো লম্বা হাড়ের মধ্যে তরুণাস্থি নামের হালকা, মসৃণ, স্বচ্ছ, নরম হাড় রয়েছে। পাশাপাশি দুটো তরুণাস্থির মধ্যে সাইনোভিয়াল গহ্বর নামে ফাঁকা স্থান থাকে। এই ফাঁকা স্থানে হলদে, বাদামি বর্ণের এঁটেল ও পিচ্ছিল তরল পদার্থ থাকে। এই তরল পদার্থটির নাম সাইনোভিয়া। মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায়ই মানুষের হাঁটুর হাড়ের গাঁথুনি তৈরি হয়।

হাঁটুর অস্থিসন্ধির কাজ
১। এই অস্থিসন্ধি গর্ভের শিশুকে মায়ের পেটে দুই পা ভাঁজ করে রাখতে সহায়তা করে
২। পায়ের হাড়গুলোকে হাঁটুর বন্ধনী দৃঢ়তা প্রদান করে। ফলে মানুষ শক্তভাবে হাঁটতে ও দৌড়াতে পারে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩। মেরুদণ্ডকে দেহের ভার বহন করতে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে।

অস্থিসন্ধির যত্ন নিন
- গর্ভাবস্থায় মায়েরা উঁচু হিলযুক্ত জুতা পরবেন না। শরীরের ওজন বয়স অনুযায়ী বেড়ে গেলে হাঁটু ও পায়ের পাতায় ব্যথা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলে মেরুদণ্ডের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাই বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন ঠিক রাখুন।
- সব সময় সুষম খাবার খান। দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাবেন না।
- ওজন কমানোর জন্য হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ হাড়ের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই স্থূলকায় ব্যক্তিরা আস্তে আস্তে খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন।
- প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন।
- শরীরে ক্যালসিয়াম, আয়রন, আয়োডিনের অভাব হলে সাইনোভিয়া শুকিয়ে যায়, হাড়ে ক্ষয় শুরু হয়। দেখা গেছে বাংলাদেশে ৪০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের হাঁটুর অস্থিসন্ধি দুর্বল হয়ে যায়। তাই নিয়মিত ক্যালসিয়াম, আয়রন, আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার খান। এগুলো হাড়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রসূতি মায়েরা প্রসবের (স্বাভাবিক বা সিজারিয়ান) পর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকবেন না। তবে স্বাভাবিক ও মিজারিয়ানদের ক্ষেত্রে ৬ মাস ১ বছর পরে দীর্ঘ সময় দাঁড়ালে সমস্যা নেই।

ডাঃ ফারহানা মোবিন
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা।
এম.পি.এইচ, সিসিডি (বারডেম হাসপাতাল)
সি-কার্ড (ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন)
কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট (কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন)

সর্বশেষ সংবাদ

মেডিকেল এর আরও সংবাদ