মূত্রনালি ও মূত্রাশয়ের যত্ন


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২৩শে নভেম্বর ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার  | দুপুর ১২:২৪ মেডিকেল

আমাদের দেহের তরল দূষিত পদার্থগুলো প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের বাইরে চলে যায়। মূত্র নিঃসরণ হওয়ার আগে দেহের ভেতর মূত্রাশয় নামক থলেতে জমা থাকে। ইংরেজিতে মূত্রাশয়কে বলে ইউরিনারি ব্লাডার। মানুষের দুটো কিডনির সঙ্গে লম্বা দুটো মাংসল নালি থাকে। এদের বলে মূত্রনালি। মূত্রনালিকে ইংরেজিতে বলে ইউরেটার। মূত্রনালি কিডনি থেকে মূত্রাশয় পর্যন্ত বিস্তৃত। মূত্রাশয়ের অবস্থান মানুষের তলপেটে। কিডনির সাহায্যে দেহের প্রয়োজনীয় তরল পদার্থ দেহেই থেকে যায়, আর অপ্রয়োজনীয় অংশ কিডনি থেকে মূত্রনালির সাহায্যে মূত্রাশয়ে জমা হয়। মানুষের দেহে কিডনি কাজ করে ফিল্টার-যন্ত্রের মতো। আর মূত্রনালি, মূত্রাশয় যথাক্রমে পানির পাইপ ও পানির ট্যাঙ্কের মতো কাজ করে। প্রতিটি মূত্রনালি লম্বায় প্রায় ২৫ সেমি আর প্রস্থে ৩ সেমি। আমাদের দেহে মূত্রাশয় সংখ্যায় একটি। এটি একটি মাংসল থলে। দেহের নিম্নাংশে এর অবস্থান। মূত্রের পরিমাণের ওপর এর আকার ও আয়তন নির্ভরশীল। শূন্যাবস্থায় এটি থাকে ত্রিকোণাকৃতি আর মূত্র পূর্ণ অবস্থায় থাকে গোলাকার। একটা শিশুর মূত্রাশয়ে প্রায় ২০-৫০ মিলি মূত্র থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক একটা লোকের থাকে ১২০ থেকে ৩২০ মিলি। মূত্রাশয়ে ২২০ মিলি মূত্র জমা হলেই মানুষ তা নির্গমনের প্রয়োজন অনুভব করে।

সঠিকভাবে মূত্র দেহের বাইরে নির্গমন হতে না পারলে রক্তে দূষিত পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে কিডনি মূত্রনালি, মূত্রাশয়ে ইনফেকশনজনিত বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়। চরম পরিণতিতে কিডনিতে পাথর জমে। কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কাজ চালানোর জন্য মূত্রনালি ও মূত্রাশয়ের অবদান অনেক। সামান্য সচেতনতা অবলম্বন করে দেহের এ অংশের বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়।

মূত্রনালি ও মূত্রাশয়ের যত্ন-
১. প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করুন। এতে মূত্রনালি ও মূত্রাশয় হবে জীবাণুমুক্ত।
২. নিয়মিত মৌসুমি ফল ও শাকসবজি এবং তেতো খাবার খাবেন। তেতো খাবার (চিরতার রস, কালো জিরা, মেথি, করলা) দেহের অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। রোগজীবাণু ধ্বংসে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
৩. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গর্ভনিরোধক বা যৌনবর্ধক ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। বছরের পর বছর এসব ওষুধ ব্যবহার দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
৪. মাদকদ্রব্য বর্জন করুন।
৫. শরীরচর্চা করলে দেহ থেকে ঘামের মাধ্যমে সোডিয়াম, ক্লোরিন, পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। এই ঘাটতি পূরণ না হলে কিডনি, মূত্রনালি, মূত্রাশয়ের ক্ষতি হতে পারে। তাই যাঁদের অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ হয় তাঁরা লবণপানির সঙ্গে অল্প চিনি বা লেবু মিশিয়ে পান করুন।

ডাঃ ফারহানা মোবিন
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা।
এম.পি.এইচ, সিসিডি (বারডেম হাসপাতাল)
সি-কার্ড (ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন)
কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট (কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন)

সর্বশেষ সংবাদ

মেডিকেল এর আরও সংবাদ