এই রোজায় দূর হোক পানি শূন্যতা- ডাঃ ফারহানা মোবিন


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১লা জুন ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার  | দুপুর ১২:৩৩ মেডিকেল

পানি দেহের জন্য ভীষণ জরুরী। শুধু রমজান নয়, পুরো বছরে পান করুন প্রচুর পরিমান পানি। প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করতে হবে। চলুন জেনে নেই পানির উপকারিতা।

কিডনী সচল রাখতে পানি-
কিডনী আমাদের দেহের একটি অতি প্রয়োজনীয় অঙ্গ। একে দেহের ছাঁকন যন্ত্র বলা হয়। দেহের পুষ্টিকর উপাদানগুলো রেখে অপ্রোয়জনীয় উপাদাঙ্গুলোকে মূত্রের সাথে বের করে দেয়। এই কিডনীকে সচল রাখতে হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে। তবে কোনো কারণে কিডনীর কার্যক্ষমতা নষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান করতে হবে।

পানি অ্যাসিডিটির প্রধাণ ওষুধ-
অ্যাসিডিটি বা গ্যাসট্রিকের হাত থেকে বাঁচতে হলে পানির বিকল্প নেই। বুক জ্বালা-পোড়া, বমি বমি লাগা, টক ঢেকুর ওঠা, বুকে আলপিনের মতো খোঁচানো ব্যাথা, পিঠে ব্যাথা এগুলো সব কমে যায় বেশি বেশি পানি পান করলে।

দেহের চর্বি কমাতে পানি-
রমজান মাসে অনেকেই ইফতারে ভাজা-পোড়া খাবার খেয়ে ফেলে বেশি। ফলে শরীরে জমে অনাকাঙ্খিত ফ্যাট বা চর্বি। তাই ইফতারের পর থেকে সেহরি পর্যন্ত কমপক্ষে ৭/৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে। পানি এই গুরুপাক খাবারগুলো হজমে সহায়তা করে ফ্যাট কমাতে সাহায্য করবে।

জন্ডিসের জন্য পানি-
প্রচুর পরিমানে পানি পান করলে দেহের বিলিরুবিনের মাত্রা কমে আসে। বিলিরুবিন হলো রক্তের একটি উপাদান যা কারো শরীরে নির্দিষ্ট পরিমানের থেকে বেড়ে গেলে সে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়। প্রচুর পানি পান করে জন্ডিসের হাত থেকে বাঁচা যায়। এছাড়া গলব্লাডার বা পিত্তথলির কাজ সুষ্ঠভাবে চালানোর জন্য পানির বিকল্প নেই।

ব্রণ দূর করতে পানি-
কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে পানি ভীষণ উপকারি। নিয়মিত পানি পান করলে খাবার হজম ঠিকমত হয়, ফলে ব্রণের সমস্যা দূর হয়। ত্বকের উজ্জ্বলতাও বেড়ে যায়।

গর্ভবতীদের জন্য পানি-
গর্ভস্থ শিশু পেটে পানির থলের মধ্যে বেড়ে ওঠে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত পানি পান করলে সেই পানি ভর্তি থলের অবস্থান ঠিক থাকে ফলে শিশু সুস্থ থাকে।

শরীরের অভ্যন্তরীন তাপমাথা বজায় রাখে পানি-
ঘাম ও মূত্রের সাহায্যে শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দিয়ে অভ্যন্তরীন তাপমাথা ঠিক রাখে পানি। হাত ও পায়ের তলায় জ্বালা-পোড়া কমে যায়। যাদের প্রস্রাবে ইনফেকশন বা জ্বালা-পোড়া আছে তাঁরা প্রচুর পানি পান করুন।

এছাড়া আরোও যে যে সময়ে পানি প্রয়োজনীয় টা হোলো,
১। মাতৃদুগ্ধদান কালীন সময়ে।
২। অতিরিক্ত গরমে দেহের লবন-পানির সাম্যাবস্থা বজায় রাখার জন্য।
৩। ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হৃদপিন্ড ভালভাবে কাজ করার জন্য।
৪। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ করেন, এমন নারীদের জন্য।
৫। যেসব শিশুরা কৌটার দুধ খায় তাদের জন্য।
৬। রক্তে ইনফেকশন থাকলে।

পানির অপর নাম জীবন। তাই সময় ও সুযোগ বুঝে নিয়মিত প্রচুর পানি পান করুন। কর্মক্ষেত্রে সম্ভব না হলে যেটুকু সময় বাসায় আছেন, সেই সময়ে পানি পান করুন বেশি বেশি করে। আর রমজানে যেহেতু দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয় তাই এসময় পানিশূণ্যতা দূর করতে ইফতারের পর থেমে থেমে প্রচুর পানি পান করুন।

ডাঃ ফারহানা মোবিন
এমবিবিএস (ডি ইউ), পোস্ট গ্রাজুয়েশন (পাবলিক হেলথ)
রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার (গাইনী এন্ড অবস)
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
ডায়াবেটোলোজি, বারডেম হাসপাতাল
ই-মেইলঃ farhanamobin31@yahoo.com

সর্বশেষ সংবাদ

মেডিকেল এর আরও সংবাদ