রিফিউজি থেকে নায়ক, নায়ক থেকে নায়করাজ


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২২শে আগস্ট ২০১৭, মঙ্গলবার  | দুপুর ০২:০৬ দেশ

ই-বার্তা।। নিজের নামের পাশে রাজা শব্দটি কতজন অর্জন করতে পারে? হাজারো মনের স্বপ্নের নায়ক সবাই হতে পারে না। সুদর্শন চেহারা, সাবলীল অভিনয়, অসাধারণ ব্যক্তিত্য, চোখে মুখে রোমান্টিকতা আর তিন দশক দাপটের সাথে বাংলাদেশের চলচিত্রে রাজত্ব করা রাজাই হলেন নায়করাজ রাজ্জাক।

সাধারণ মানুষ থেকে নায়ক, নায়ক থেকে নায়করাজ হওয়া রাজ্জাকের ইতিহাস অনেকটা সিনেমার গল্পের মতোই। কিশোর বয়সেই অভিনয়ের সাথে পরিচিত ঘটেছে রাজ্জাকের। ১৯৪২ সালে কলকাতায় জন্ম নেয়া আব্দুর রাজ্জাক কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্বরসতী পূজা চলাকালীন সময়ে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। তাঁর টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁকে বেছে নেন নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে। এরপর ১৯৬৪ সালে শরণার্থী হয়ে ঢাকায় আসেন এবং জড়িয়ে পড়েন চলচ্চিত্রে।

প্রথমে দুই একটা সিনেমায় ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। কিন্তু ছিমছাম গড়ণের সুন্দর হাসিমুখটি চোখ এড়ায়নি পরিচালকদের। জহির রায়হানের পরচালনায় ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় প্রধাণ চরিত্রে অভিনয় করা রাজ্জাকের প্রথম ছায়াছবি বেহুলা। সেই থেকে শুরু। এরপর রাজ্জাককে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দ্রুত খ্যাতির শীর্ষে উঠেছেন তিনি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্তই


তিনি এই খ্যাতি বজার রেখেছেন।

মানুষের ভালোবাসায় রাজ্জাক সিক্ত হয়েছেন বারবার। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি যতটা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন সেটি অনেকটা বিরল। ভূবন ভোলানো এই নায়কের হাসি যে কতো মনে দাগ কেটেছে তা বলা বাহুল্য। প্রথম অভিনয়েই দর্শকও লুফে নিয়েছে নতুন এই নায়ককে। ৫০ বছর ধরে তিনি চলচ্চিত্র শিল্পে কাজ করছেন। ২০১৫ সালেও তার অভিনীত একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে।

রাজ্জাক-কবরী জুটির কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। রাজ্জাকের নাম নিলেই নিজে থেকেই কবরী নামটি আমাদের মনে ভেসে উঠে। এখনো দর্শকের কাছে অন্যতম সফল রোমান্টিক জুটির উদাহরণ হয়ে আছেন রাজ্জাক-কবরী। তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়াও ছিল খুব ভালো। তাইতো তাঁরা অদ্ভুত সাবলীল প্রেমের অভিনয় করে পর্দা কাঁপিয়েছিলেন। নিজের ক্যারিয়ারে নায়করাজ পাঁচবার শ্রেষ্ঠ নায়কের পুরষ্কার পেয়েছেন। এছাড়াও, রাজ্জাক জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করেছেন।

নায়করাজ রাজ্জাক চিরবিদায় নিয়েছেন সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হে রাজিউন)। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুর পর ওপারেও ভালো থাকুন আমাদের নায়করাজ। আর বেঁচে থাকুন আমাদের মনে।

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ এর আরও সংবাদ