তাহার যত কথা
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ৮ই এপ্রিল ২০১৭, শনিবার
| সন্ধ্যা ০৬:২০
গদ্য
ফারজানা আলম রিয়া
পার্লার থেকেই পালানোর প্ল্যান করলো উর্বশী। কি করা যায় ভাবলো সে। মেঝবোনটাকে বলল:
-এই যা তো বেলিফুল আন সাহবাগ থেকে চুলে লাগাবো।
-আপু কি বলো? এখন? মাথা ঠিক আছে?
-তুই দিবি না?
- আচ্ছা যাচ্ছি, তুমি একা এখানে...
-আমি চোখ বন্ধ করে সাজগোজ উপলব্ধি করি, তুই যা না সোনা নিয়ে আয়।
বোনটা যেতেই ব্যাগ খুলে একটা একহাজার টাকার নোট বের করে উর্বশী। যেই চাকমা মেয়েটা ওকে সাজাচ্ছিলো ওকে দিয়ে বললো, আমি এখন চলে যাব কিন্তু এইকথা এখন কাউকে বলবেনা তুমি।মেয়েটা হঠাৎ বোকাবনে যায়।বুঝে উঠতে পারেনা কি বলবে?বিয়ের আধা সাজের উর্বশী বের হয় পার্লার থেকে।
রাপা প্লাজায় এসে একটা দুধসাদা শাড়ী কিনে সে।ওয়াশরুমে ঢুকে চট করে শাড়ীটা বদলায়,টকটকে লাল কাতানের ব্লাউজ তার পরনে, তার সাথে দুধসাদা শাড়ী। পুলিশ স্টেশন এ যেয়ে মা আর ভাইদের নামে কেস করে নারী নির্যাতন আইনে তাকে মারধর করে জোর করেই বিয়ে দেয়া হচ্ছিল।সারাশরীরে মারের দাগ।দারোগা টা বারবার জিগ্যেস করে আর কোথায় কোথায় মারছে ভাল করে দেখান।আর লোলুপ দৃষ্টি নিয়ে দেখে খুব অসস্থি লাগে উর্বশী র।তারা রিপোর্ট লিখে অবশেষে।
এবার সে শেষবারের মত তুহিনের বাসায় যায়।গেইটে দারোয়ান বলে তুহিন কে ডেকে দিতে।
দারোয়ান বলে ওরা দেশে নাই, ওর মা ওকে নিয়ে বিদেশে গেছে।কেউ বাসায় নাই। তুহিনের দাদী আছেন চাইলে দেখা করতে পারে উর্বশী। কিছু না বলেই ভেতরে ঢুকে ও। বুড়ি দাদী ওকে দেখেই এগিয়ে আসে।উর্বশী কে নিয়ে তুহিন অনেকবার ওর দাদীর কাছে গেছে বুড়িটা খুব আদর করে ওকে।
উর্বশী কে দেখে খুব অবাক হল দাদী। বললো তুহিন দেশে নাই।আর কিছু জিগ্যেস করার বা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে উর্বশী। এরমধ্যে ওর বোনেরা, মা, ভাইরা ফোনের উপর ফোন করতে থাকে।এবার উর্বশী ফোনটা আছাড় দিয়ে ভেংগে ফেলে দেয়।
এলোমেলো রাস্তায় হাঁটতে থাকে কিছুক্ষণ। এরপরই সিদ্ধান্ত শেষবারের মত আরেকবার সুইসাইড করার। এর আগেও দুইবার এই কাজ সে করছে, তবে সফল হয়নি।
একটা রেলক্রসিং ধরে হাঁটছে দুধসাদা শাড়ী পরিহিতা একটা মেয়ে, মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা তার। ট্রেন আসছে...
আগের খবর মোমের পুতুল
পরবর্তী খবর প্লাম ব্লসম