ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রন করুন, সুস্থ থাকুন
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ১৪ই অক্টোবর ২০১৭, শনিবার
| দুপুর ০২:০৭
মেডিকেল
ই-বার্তা।। আমাদের দেশে প্রতি পাঁচ জনে একজন ব্লাড প্রেসারে ভুগছে। হাই ব্লাড প্রেসার হওয়ার অন্যতম কারণ হলো পটাশিয়াম ও হাইসোডিয়াম খাবার। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে শুধুমাত্র ওষুধের উপর নির্ভরশীল থাকলে চলবেনা। কারন অনেক অনেক ওষুধ খেয়েও যদি আপনি নিয়ম মেনে খাবার না খান, ঘুম না হয়, শারিরিক পরিশ্রম না করেন তাহলে ওষুধ খেয়েও কোনো লাভ হবেনা বরং আরো ক্ষতিই হবে।
একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মি.মি. মার্কারি। লো ব্লাড প্রেসার অবশ্যই ঝুকিপূর্ণ কিন্তু তা হাই ব্লাড প্রেসারের মত বেশি ভয়ংকর নয়। বিভিন্ন কারণে লো ব্লাড প্রেসার হয়ে থাকে এর মধ্যে পানিশুন্যতা, ডায়রিয়া, অত্যাধিক বমি হওয়া, খাবার সময়মত না খাওয়া, হরমনের ভারসাম্যহীনতা, রক্তশুন্যতা কিংবা রক্তক্ষরণ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবার স্যালায়িন সবসময়ই গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সকলের রক্তচাপ এক রকম নয়। এমন কি একই ব্যক্তির রক্তচাপ সব সময় এক রকম থাকে না। দিনের বিভিন্ন সময়ে রক্তচাপ কম-বেশি হয়। শারীরিক পরিশ্রম করলে কিংবা উত্তেজনা হলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। চা-কফি পান করলে কিংবা ধূমপানের পরেও রক্তচাপ বাড়ে।
জন্মগতভাবে যাদের হার্ট বা হৃদপিণ্ডে ছিদ্র আছে, কিডনিতে সমস্যা, ভালবের সমস্যা আছে তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি। এছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা দেখা যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে শরীরের ৪টি গুরুত্বপূর্ণ অংশ আক্রান্ত হয়।
১। মস্তিষ্ক। উচ্চ রক্তচাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। একে বলে ব্রেইন স্ট্রোক। এতে শরীরের একদিক বা যেকোনো অঙ্গ অবশ হয়ে যেতে পারে।
২। হার্ট। উচ্চ রক্তচাপে হার্টে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। এতে রক্ত চলাচলে সমস্যা হয়। হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৩। চোখ। অতিরিক্ত উচ্চ রক্তচাপের কারণে রোগী চোখে ঝাপসা দেখে। চোখে রক্তক্ষরণের ফলে চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৪। রক্তনালী। উচ্চ রক্তচাপের ফলে দেহের রক্তনালী চিকন যেতে পারে যার ফলে রক্তচলাচলে সমস্যা হয়। তাছাড়া পায়ে ঘা হওয়া এমন কি কালো দাগ ও ঘা হলে শুকাতে অনেক দিন সময় লাগে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রন করতে যে সমস্ত বিষয়ে আপনার খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো হোলো, - প্রতিদিনের খাবার তালিকায় লেবু, কমলালেবু, কলা, টমেটো, ডাবের পানি রাখুন। - কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার যেমন ক্রিম, মাংস, ডিমের কুসুম, মাখন, ফ্রেঞ্জ ফ্রাইজ সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলতে হবে।
- প্রচুর পরিমাণ ফল ও সবজি খেতে হবে।
- ফ্যাট জাতীয় খাবার কখনোই খাবেন না। তেল, ঘি, মসলা এড়িয়ে চলতে পারলে আরও ভালো হয়।
- নিয়মিত এক্সারসাইজ ম্যাজিকের মতো কাজ করে। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করতে এবং যাঁদের এখনও এই রোগটি চেপে ধরেনি তাঁদের এর থেকে শত হাত দূরে রাখতে অনেক সাহায্য করে নিয়মিত ব্যয়াম।
- প্রতিদিন নিয়ম করে ১২০ গ্রাম টক দই খান। এতে মজুত ক্যালশিয়াম ব্লাড ভেসল ভালো রাখে। ফলে প্রেশারও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- কড়া কড়া ওষুধ খাওয়ার থেকে রোজ একটা করে কলা খেলে বেশি সুস্থ থাকবেন।
- বাড়তি ওজন মানেই হার্টের উপর বাড়তি চাপ। যার ফল উচ্চরক্তচাপ। তাই সব সময়ে চেষ্টা করুন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার।
- কাঁচা বাদাম, অর্থাৎ যে বাদামটি বালুতে ভাঁজা হয়নি সেটি প্রতিদিন ৪-৫ টি খান যা আপনাকে রাখবে প্রেসার থেকে কয়েক শত হাত দূরে।
ডাঃ ফারহানা মোবিন
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার, গাইনি এন্ড অবস, স্কয়ার হাসপাতাল ঢাকা।
আগের খবর আজ সকালে নাস্তা করেছেন তো?
পরবর্তী খবর ছোট্ট সোনামণির অসুস্থতায় করণীয়- পর্ব ১