হ্যালো হ্যালুইন


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৩১শে অক্টোবর ২০১৭, মঙ্গলবার  | বিকাল ০৪:৪৯ বিদেশ

ই-বার্তা।। বছর ঘুরে আবার এলো ভূতের উৎসব। পশ্চিমা দেশের পালিত একটি খুবই জনপ্রিয় উৎসব এই হ্যালুইন। এই উৎসবের প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে বেশ কয়েক বছর হোলো। তাই হ্যালুইন শব্দটির সাথে পরিচিত নন এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। অনেকে আবার হ্যালুইনের নাম জানলেও জানেন না এইদিনের ইতিহাস আর উৎসবের নিয়ম কানুন। যারা এখনো হ্যালুইন উৎসবের ধরণ সম্পর্কে জানেন না এই লেখাটি তাঁদের জন্য।

হ্যালুইন মূলত শুরু হয়েছিল আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে। সেখানকার মানুষের বিশ্বাস ছিল যে গরমের শেষে শীতের শুরুতে হ্যালুইন সন্ধ্যায় সমস্ত মৃত আত্মীয়-স্বজনের আত্মারা নেমে আসে এই পৃথিবীর বুকে। অষ্টম শতাব্দীতে পোপ গ্রেগরী ১লা নভেম্বার কে “অল সেইনটস ডে” ঘোষণা করেন এবং তার আগের সন্ধ্যা মানে ৩১শে অক্টোবারকে “অল হ্যালোস ইভ” বা হ্যালুইন নামে অভিহিত করেন। মানুষের অন্ধ বিশ্বাস ছিল অল হ্যালোস ইভে প্রেতাত্মারা নেমে আসে, তারা মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে আসে, আর তাই এই প্রেতাত্মাদেরকে প্রতিহত করার জন্য সকলে একসাথে জড়ো হয়ে আগুন জ্বালিয়ে আগুনের চারপাশে ঘিরে থেকে নানা রকম ভঙ্গীতে পালটা ভয় দেখাত। আইরিশ ও স্কটিশরা শালগম কে সুন্দর করে কেটে কেটে ভুতের হাসিমুখের আকার দিয়ে লন্ঠন বানিয়ে সকলের বাড়ীর সীমানাতে জ্বালিয়ে রাখত যাতে করে প্রেতাত্মারা আলো দেখেই ভয়ে পালিয়ে যায়।


প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর হ্যালুইন পালন করা হয়। এটি আসলে সন্ধ্যা বা রাতের উৎসব, দিনের নয়। আর এটি মানুষের নয়, ভূতের উৎসব। ভূতের শখ-আহ্লাদ পূরণ করার রাত এটি। এই উৎসবের মূল বিশ্বাস হোলো, এই রাতে সমস্ত মৃত আত্মারা পৃথিবীর বুকে নেমে আসে, নিকটজনের সান্যিধ্য লাভের


আশায়। সবার মাঝে থাকার বাসনা নিয়ে এরা আসে, কিন্তু পৃথিবীর মানুষ সেটা কোনভাবেই হতে দিতে চায় না। আমেরিকায় প্রতিবছর হ্যালুইনে ছেলেমেয়েরা নানা রকম ভৌতিক পোশাক পরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভয় দেখায় আর চকোলেট আদায় করে নেয়। তবে মজার ব্যাপার হলো, অনেকেই বিশ্বাস করে ভূতের পোশাক পরিহিতদের মধ্যে সত্যিকারের ভূতও থাকে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ৫০ শতাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করে ভূত বা অশরীরী কোনো শক্তি এ পৃথিবীতে আছে। তাদের অনেকেই ভূতকে বলে স্পিরিট অথবা গুড সোল। এই রাতে সকলেই যার যার বাড়ীর সামনে আলো জ্বালিয়ে রাখে, ল্যান্টেনের আলোয় যেনো মৃত আত্মারা পথ দেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।

সময়ের স্রোত হ্যালুইনের কুসংস্কার মুছে দিয়েছে ঠিকই তবে এটি এখন শিশুতোষ আনন্দের এক নির্মল উৎসবে পরিণত হয়েছে। হ্যালুইনকে এখন শুধুই বাচ্চাদের আনন্দ উৎসব বলা যায়। উদাহরণস্বরূপ হ্যালুইনের সন্ধ্যার একটি বর্ননা দেয়া যায়-
হ্যালুইনের সন্ধ্যায় হঠাৎ দরজায় ঠকঠক করে কেউ একজন চেঁচিয়ে উঠলো ট্রিক অর ট্রিট। বলা বাহূল্য চিৎকারটি কোন ছোট বাচ্চার। এবারে আপনাকে তাকে খুশি করতে হবে। চকলেট বা সুন্দর গিফট দিয়ে তাকে খুশি করতে না পারলে সে আপনাকে ভয় দেখাবে। এভাবেই হ্যালুইনের সন্ধ্যায় ছোট ছোট বাচ্চারা ভুতের মত সেজে, অদ্ভুত সব জামাকাপড় পরে বাড়ি বাড়ি ট্রিটের জন্য ঘুরে বেড়ায়। মিষ্টিজাত খাবার মূলত এই উৎসবে বেশি তৈরী করা হয়। তবে সব খাবারেই থাকতে হবে একটি হরর ইমেজ। অর্থাৎ আপনার তৈরী করা খাবারের শেইপ ও কালার হতে হবে ভূতের মত বা ভয়ংকর কিছু। অদ্ভুত আর ভয়ঙ্কর সব দেখতে খাবারগুলো দেখলেই আপনার পিলে চমকে যাবে।

সর্বশেষ সংবাদ

বিদেশ এর আরও সংবাদ