কলঙ্কিত জেলহত্যা দিবসের ইতিহাস
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ৩রা নভেম্বর ২০১৭, শুক্রবার
| বিকাল ০৩:৩৭
দেশ
ই-বার্তা।। ইতিহাসের কলঙ্কময় ৩ নভেম্বর আজ। জাতীয় জেলহত্যা দিবস। ৪২ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে নিমর্ম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটককৃত জাতীয় চার নেতাকে। তারা হলেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামান। তাঁরা সবাই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। কারাগারের আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এমন জঘন্য, নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতির জনককে গ্রেফতার করার পর দীর্ঘ নয় মাস স্বাধীনতাযুদ্ধকালে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ওপর দুইজন এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলাযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দেশের স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয় এই চার নেতাকে তাদের সরকারে যোগদানের প্রস্তাব দেয়। সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে প্রথমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে সেই কারাগারেই অন্তরীণ থাকা অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাদের। সে রাতে ঘাতক দলের একমাত্র মিশন ছিল চার নেতাকে হত্যা করা। কারাগারে ঢোকার পর জেল কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাদের বাধা দিলেও পরে ঘাতক বাহিনীকে সর্বোচ্চ মহল থেকে কারাগারে ঢুকতে দেওয়ার নির্দেশ দিলে তারা ঢুকে পরে তাজউদ্দিনের কক্ষে। সেখানে অন্য তিনজনকেও একত্র করে। তারপর সেখানেই তাদের গুলি করে এবং বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যার তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে নির্মমভাবে এই চার মহান নেতাকে হত্যার দিনটি জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, পুর পৃথিবী থমকে গিয়েছিলো এই নির্মম হত্যাকান্ডে।
এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ঘাতকরা বাঙালিকে পিছিয়ে দিয়েছিল সমৃদ্ধিতে। ঘটনার প্রায় ২৯ বছর পর এর বিচারকার্য শুরু হয়। লজ্জাজনক হলেও একথা সত্যি যে, আজো এই বিচারকাজ সম্পন্ন হয়নি। জাতি আজ নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করবে এই চার নেতাকে। তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল সংগঠনের উদ্যোগে সারাদেশে পালিত হচ্ছে শোকাবহ এই দিবস।
পরবর্তী খবর ধন্যবাদ গল্পের যাদুকর