হরেক রকম বিয়ে
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ৫ই নভেম্বর ২০১৭, রবিবার
| বিকাল ০৫:৪৯
আন্তর্জাতিক
ই-বার্তা।। বিয়ে কারো জন্য পৌষ মাস আবার কারো জন্য সর্বনাশ। অনেকে আবার ভাবেন বিবাহিত জীবন আর আধ মরা জীবন একই। সে যাই হোক। বিয়ে হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন একটি সামাজিক প্রথা। যার মাধ্যমে নারী ও পুরুষ একে অপরের সহযোগী হয়ে, জীবনসঙ্গী হয়ে সুখ দুঃখ ভাগ করে নিয়ে এক সাথে বসবাস করে। পরিবার গঠন করে। সন্তান উৎপাদন ও প্রতিপালনের বৈধ ও পবিত্র সামাজিক বন্ধন হিসেবে এখনো বিয়েকেই মানা হয়।
ধর্ম ভেদে, অঞ্চল ভেদে বিয়ের প্রথার ভিন্নতা রয়েছে। বিয়ের জন্য হরেক রকমের প্রথা প্রচলিত আছে পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে। যেগুলো অনেক মজার ও বৈচিত্র্যময়। কি সেই মজার রীতি নীতি গুলো জেনে নেয়া যাক তাহলে।
বরের মোজা খুলে নেয় বন্ধুরা
কোরিয়াতে বিয়ের পর বরের বন্ধুরা বরের মোজা খুলে নেয়। তারপর দড়ি দিয়ে বরের গোঁড়ালি বেঁধে তার পায়ে করভিনা নামক এক ধরনের হলুদ মাছ দিয়ে মারতে থাকে। এটাই নাকি বিবাহিত পুরুষ হিসেবে প্রথম রাতের প্রস্তুতি। কোরিয়ানদের বিয়েতে আরেকটি প্রথা হলো বিয়ের সময় বরের পিতামাতা পুত্রবধূকে খেজুর সদৃশ বীজ এবং কুল জাতীয় ফল ছুড়ে মারে। যদি পুত্রবধূ কিছু বীজ ধরতে পারে তবে আশা করা হয় দম্পতির ছেলে সন্তান হবে। অবশ্য কন্যা সন্তান হবে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরটি পেতে বিয়ের অনুষ্ঠানে আড়াল থেকে বরের ওপর নজর রাখা হয়। যদি দেখা যায়, বিয়েতে বর অপেক্ষাকৃত বেশি হেসেছে তবে ধরা হয় এদের কন্যা সন্তানই হবে!
কাঁচা মুরগির বাচ্চা খেয়ে বিয়ে
আফ্রিকার কঙ্গোর অধিবাসী বান্ডা গোত্রের মেয়েরা বিবাহযোগ্য হলেই তাকে একটি কাঁচা আস্ত মুরগির বাচ্চা খেয়ে দেখাতে হবে যে সে বিবাহযোগ্য। বাচ্চাটি খাওয়ার সময় একটি হাড়ও ভেঙে খেতে পারবে না। যে সঠিক রীতি অনুযায়ী খেতে পারবে তাকে বিবাহযোগ্য বলে গণ্য করা হয় এবং পরবর্তী একবছর সেই কনেকে সংসারের এমনকি নিজের ব্যক্তিগত কাজও করতে দেয়া হয় না। অন্যেরা তাকে স্নান করা থেকে শুরু করে সব কাজ করে দেয় যতদিন পর্যন্ত তার বিয়ে না হয়।
বিয়ের আগে কাঁদতে হয় এক মাস
আমাদের দেশে বিয়ের পর মেয়েরা যখন বাবার বাড়ি ছেড়ে স্বামীর বাড়ির দিকে রওনা দেয় তখন তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র চীনের তুজিয়া গোষ্ঠির মেয়েরা কিন্তু বিয়ের আগে কান্না-কাটি করে। কিন্তু যেভাবে তারা কাঁদে তা বেশ অবাক করার মতো ঘটনাই বটে! তুজিয়া গোষ্ঠির মেয়েরা এই কান্না-কাটির কাজটা বিয়ের আগের ঠিক এক মাস ধরে করে। এই একমাস প্রতিদিন নিয়ম করে কনেরা এক ঘণ্টা করে কাঁদে। শুধু তাই নয়, বিয়ের দিন যতই ঘনিয়ে আসে কান্নার দলের সদস্য সংখ্যা ততই বাড়তে থাকে। যেমন, বিয়ের যখন ২০ দিন বাকি থাকে তখন মেয়ের সাথে এসে যোগ দেয় তার মা। বিয়ের যখন ১০ দিন বাকি থাকে তখন এসে যোগ দেয় কনের নানি। আর শেষের বাকি কয়েকটা দিন পরিবারের সবাই এই কান্নার আসরে যোগ দেয়। এটি তারা নিচু স্বরে গান গাওয়ার মতো করে করে। এটিই তাদের চিরাচরিত ঐতিহ্য। বেশ অবাক কান্নাই বটে! তাইনা?
গাছের সাথে বিয়ে
ভারতে মাঙ্গলিক মেয়েদের প্রথমে একটি গাছের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সেই গাছটিকে কেটে ফেলা হয় এবং এরপরই তাকে স্বামীর সাথে বিয়ে হয়। এর কারণ হলো যে সকল নারী মাঙ্গলিক হয় তাদের বিয়ের পরপরই স্বামী মারা যায়। এজন্য স্বামীর ওপর থেকে এই অভিশাপ দূর করার জন্য প্রথমে গাছের সাথে বিয়ে দিয়ে গাছটিকে মেরে ফেলা হয়। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাইয়ের প্রথম বিয়ে একটি গাছের সাথে হয়েছিল। কারণ, ঐশ্বরিয়া রাইও ছিলেন একজন মাঙ্গলিক।
এক মিনিটেই বিয়ে
কতটা দ্রুত বিয়ে হতে পারে ধারণা করতে পারেন? পানামার সান-ব্লাস উপজাতীয় গোষ্ঠির বিয়ে হতে সময় লাগে মাত্র এক মিনিট! অবাক করা হলেও সত্যি মাত্র এক মিনিটেই এই জাতিগোষ্ঠি সেরে ফেলে তাদের বিয়ের কাজ। বিয়ের অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দুটি গাছে একটি শক্ত কাপড়ের দু’মাথা বাঁধা থাকে। বড় গিয়ে ওই ঝুলন্ত কাপড়ে শুয়ে পড়ে। এক সময় বিয়ের সাঁজে সজ্জিত নববধূ বরের পাশে এসে বসে। এক মিনিট এভাবে বসে থাকলেই তাদের বিয়ে হয়ে যায়!
আগের খবর সুন্দরী নারীর দেশ
পরবর্তী খবর বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ