পুরনো দিনের বিচিত্র সব কাণ্ড
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ৮ই নভেম্বর ২০১৭, বুধবার
| সন্ধ্যা ০৭:০২
আন্তর্জাতিক
ই-বার্তা।। অনেকেরই মনে হতে পারে বর্তমান সময়েই মানুষ উদ্ভট সব কাজ করে। যেমন বানজি জাম্পিং, রোলার কোস্টারে চড়ে ইচ্ছে করেই আতঙ্কিত হওয়া, কম্পিউটার বা ফোন নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা রাত জাগা- এসব কাজ দেখলে অনেকেই ভ্রূ কুঁচকে ফেলেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা এর চাইতেও উদ্ভট কিছু কাজ করতেন? মৃত মানুষের সাথে ফটোশুট থেকে শুরু করে বছরে দুইবার মাত্র গোসল, এ সবই করতেন তারা। চলুন দেখে আসি এমনই উদ্ভট কিছু কাজের নমুনা।
প্রথম ও দ্বিতীয় ঘুম
রাত্রে একবার ঘুমিয়ে পড়লে টানা ৮-১০ ঘন্টাই আমরা ঘুমাই, তাই না? নেহায়েত অনিদ্রার রোগী বা অসুস্থ না হলে পারতপক্ষে এর মাঝে কারো তেমন একটা ঘুম ভাঙ্গে না। কিন্তু মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা এই নিয়মে চলত না। সূর্যাস্তের সাথে সাথেই তাড়া ঘুমিয়ে যেত, আর ঘুম থেকে উঠত মাঝরাতের দিকে। এ সময়ে ২-৩ ঘন্টা তারা প্রার্থনা করত, পড়াশোনা করত বা পরিবারের সাথে সময় কাটাতো। এরপর আবার সূর্যোদয় পর্যন্ত ঘুমাতো।
জীবন্ত অ্যালার্ম ক্লক
নকার-আপার নামের একটি পেশা ছিল ১৮শ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত। তাদের কাজ ছিল মানুষকে সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগিয়ে দেওয়া। তারা ক্লায়েন্টদের জানালায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বা পাথর ছুঁড়ে ঘুম ভাঙ্গাতেন। এই নকার-আপাররা কীভাবে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতেন? কেউ কেউ ধারণা করেন তারা রাত্রে ঘুমাতেনই না।
যে কোনো রোগ উপশমে রক্ত বের করা
ব্লাডলেটিং হলো এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে রোগীর শরীর কেটে দূষিত রক্ত বের করা হয় এবং আশা করা হয় এতে সে সেরে যাবে। ২,০০০ বছর আগে থেকে শুরু করে অনেকদিন পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া প্রচলিত ছিল যে কোনো রোগের ক্ষেত্রে। এতে রোগী সুস্থ হবার পাশাপাশি রক্তের অভাবে আরো দুর্বল হয়ে পড়ত।
অপরিষ্কার থাকার অভ্যাস
মধ্যযুগে কিছু কিছু ইউরোপীয় দেশে বিশ্বাস করা হত পানি দিয়ে শরীর পরিষ্কার করলে অসুখ করবে, আর উকুনকে বলা হত ঈশ্বরের মুক্তো। এমনকি রাজা-রাজরাদেরও ছিল একই বিশ্বাস। ক্যাসটাইলের রাণী প্রথম ইসাবেলা গর্ব করে বলতেন, তিনি জীবনে মাত্র দুইবার গোসল করেছেন, জন্মের পর একবার আর বিয়ের আগে একবার। একবার তার ময়লা হাত ও নখ দেখে একজন কটূক্তি করলে তিনি বলেছিলেন আরে, তুমি আমার পা যদি দেখতে!
তেজস্ক্রিয় প্রসাধনী
২০শ শতাব্দীর প্রথম দিকে তেজস্ক্রিয়তার ব্যাপারে শুধু ভালো কিছু তথ্যই জানা যেত। এ কারণে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী এটাকে পুঁজি করে টাকা কামানো শুরু করে। তখন তেজস্ক্রিয় প্রসাধনী, খাদ্য, পানীয় পাওয়া যেত। এগুলতে থাকত রেডিয়াম এবং থোরিয়াম। এতে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়নি। এবেন বায়ারস নামের একজন খেলোয়াড় প্রচুর পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পানীয় রেডিথর পান করতেন, এতে তার মৃত্যু হয়। দি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল তার মৃত্যুর খবরের শিরোনাম দেয় এভাবে- দ্যা রেডিয়াম ওয়াটার ওয়ার্ক ফাইন আন্টিল হিস যো কেম অফ।
টয়লেট পেপার হিসেবে পাথরের ব্যবহার
টয়লেট পেপার উদ্ভাবনের আগে মানুষ শৌচ কাজের জন্য কী ব্যবহার করতেন? এর তালিকা অনেক বিশাল। এর মাঝে আছে গাছের পাতা, ভুট্টার খোসা, নারিকেলের মালা, কাপড় (যারা তা কিনতে পারতেন), কাঠির আগায় লাগানো স্পঞ্জ অথবা শুধুই পানি। তবে এক্ষেত্রে গ্রীসের কথা বলতেই হয়। তারা পাথর, নুড়ি বা মাটির পাত্রের ভাঙ্গা টুকরো ব্যবহার করতেন শৌচকর্মে।
মৃত মানুষের ছবি তোলা
এই প্রথাটি শুনে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে আপনার। ১৯শ শতকে মৃত মানুষের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তাদের ছবি তোলা হতো মৃত্যুর পর। আত্মীয়দের সাথে মৃত মানুষটিকে এমনভাবে বসানো বা দাঁড় করিয়ে রাখা হতো যাতে তাদেরকে জীবিত মনে হয়। অনেক সময়ে তাদের বন্ধ চোখের পাতায় খোলা চোখ এঁকে দেওয়া হতো জীবিত দেখানোর জন্য।
পরবর্তী খবর দুই দেশের এক হোটেল