কবে পূরণ হবে শ্রমিকের দাবী?


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১লা মে ২০১৭, সোমবার  | দুপুর ০২:০৫ কলাম

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা সচরাচর মে দিবস নামে পরিচিত। প্রতি বছর ১লা মে বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয় এই দিনটি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠন সমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে ১লা মে জাতীয় ছুটির দিন।
পূর্বে শ্রমিকদের অমানবিক পরিশ্রম করতে হত।প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ আর সপ্তাহে ৬ দিন। বিপরীতে মজুরী মিলত নগণ্য, শ্রমিকরা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করত, ক্ষেত্রবিশেষে তা দাসবৃত্তির পর্যায়ে পড়ত। এর প্রতিবাদে ১৮৮৬ সালের ১লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের মূলকথা ছিল আট ঘন্টা কাজ এবং সঠিক বেতন। সেখানে আন্দোলন রত শ্রমিকের ওপর গুলি চালানো হলে ১১ জন নিহত হয়।
সেদিনের সেই আন্দোলনের পর শ্রমিকদের কাজের সময় আট ঘন্টা করা হলেও এখনো অনেক কারখানাই তা মেনে চলে না। এখনকার শ্রমিকদের অবস্থাও যেন সেই বর্বরিত সময়ের মতই। বেশিরভাগ পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কাজ করতে হচ্ছে কমপক্ষে ১০ ঘন্টা। কোন কোন স্থানে তা ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা। কিন্তু এই অমানবিক কাজের বিনিময়েও তাঁদের প্রাপ্য বেতন দেয়া হচ্ছেনা।
শ্রমিকদের আন্দোলন আজো থামেনি। কয়েকদিন আগেই ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নেমেছিল সময়মত বেতন পাওয়ার দাবীতে। শুধু বেতনই নয়, শ্রমিকদের নেই কোনরকম সুরক্ষা ব্যাবস্থা। কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য চশমা, গ্লাভস ও মাস্ক ব্যবহার করার কথা থাকলেও আমাদের দেশের বেশিরভাগ কারখানায় এগুলো মেনে চলা হয়না, কিন্তু এগুলো অত্যন্ত জরুরী। বাংলাদেশের শ্রমিকেরা দূর্ঘটনায় আহত হলে বা প্রাণ হারালে ক্ষতিপূরণের নামে যে অর্থ দেয়া হয়, তা একটি পরিবার চালানোর জন্য খুবই নগন্য।
যেদিন শ্রমিকদের এই দূর্দশা দূর হবে, যেদিন শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পাবে, সেদিনই সার্থক হবে মহান শ্রমিক দিবস। যাঁদের শক্ত পরিশ্রমি হাতের বুনিয়াদে চলমান আমাদের অর্থনীতির চাকা, তাঁরা যেদিন হাসিমুখে কাজে যাবে এবং শ্রমিক-মালিক একই কাতারে দাঁড়াবে, সেদিনই পালন হবে আসল শ্রমিক দিবস।

সর্বশেষ সংবাদ

কলাম এর আরও সংবাদ