সাদা মনের মানুষ সুব্রত ভট্টাচার্য- অষ্টম পর্ব
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ১১ই জুন ২০১৭, রবিবার
| সকাল ১১:৫৫
দেশ
যে নাম পৃথিবীর সবথেকে মধুরতম। যে নাম চির পবিত্র। যে নাম সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদস্বরুপ। যে নাম পূর্ণ ভালোবাসায় স্নিগ্ধ। যে নাম নিঃস্বার্থের উজ্জ্বল প্রতীক। যে নাম শান্তি নামক প্রশান্তিময় প্রশস্ত পাহাড়। যে নাম সুখ- দুঃখ আর হাসি- আনন্দের পরিচ্ছন্ন উদার আকাশ। যে নাম ক্লান্তি আর কষ্টের যম। যে নাম আনন্দবার্তার আনন্দময়ী প্রফুল্ল স্লোগান। সে নাম “মা”। সেই মা নামক নামটি চিরজীবনের জন্য উৎসার কাছ থেকে অদৃশ্য হয়ে গেল।
আর এদিকে, যে নামে আছে বটবৃক্ষের মতো শীতল ছায়া। যে নামে আছে শুধুই স্নেহ আর প্রেমনামক মহাপ্রেম। যে নামে আছে অভয়ারণ্যের মহাবিপ্লবী প্রলয়ে মুখোমুখি হবার দুরন্ত সাহস। যে নামে আছে অফুরন্ত ভালোবাসার ফল্গুধারার ঝর্ণাস্রোত। যে নামে আছে টিপু সুলতানের সাহসী বাহুর মতো উদাত্ত অমর বীরত্বগাঁথা। যে নামে আছে শত ঝড়, ঝঞ্ঝা আর টর্ণেডোকে মোকাবেলার মহাক্ষেম। যে নামে আছে আদর নামক টইটুম্বুর স্নেহশীল পুরুষের প্রশান্তময় মহাসাগর, সে নাম “বাবা”। মাকে হারিয়ে সেই বাবাকে পেয়ে উৎসা যেন তার সমস্ত দুঃখ ভুলে থাকবার চেষ্টা করছে। সেই বাবা, যে বাবার নাম সুব্রত ভট্টাচার্য। সেই বাবা, যে বাবার হাতের মুঠোয়, বুকের পাঁজরে, নির্মল চোখে শুধু নয় তাঁর সারা অবয়ব জুড়ে শুধুই স্নেহ, প্রেম আর ভালোবাসায় ভরা। এজন্য বোধ হয় উৎসা তার বাবার মাঝেই খুঁজে পেয়েছে চিরদিনের জন্য হারানো অভাগিনী মাকে।
বাবা সুব্রত ভট্টাচার্যও স্বাগতা ভট্টাচার্যের রেখে যাওয়া উপহার উৎসাকে পেয়ে ভুলে যেতে চান তাঁর সব দুঃখ আর যন্ত্রণা। সুব্রত ভট্টাচার্য তাঁর সমস্ত ভালোবাসা শুধু নয়, মেধা, শ্রম আর সাধনার সবটুকু বিলিয়ে দিয়ে উৎসাকে বড় করে তুলেছেন। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। বিশেষ করে, হারমনিয়ামে উৎসাকে যে রবীন্দ্র সংগীতের জন্য পারদর্শী করে তুলেছেন সেটা নিঃসন্দেহে অতুলনীয় ও অসাধারণ। পাঠক, আবৃত্তির কথা বাদই দিলাম, উৎসার কন্ঠে কখনো যদি রবীন্দ্র সংগীত শোনার সৌভাগ্য আপনার হয়ে ওঠে তাহলে সুব্রত ভট্টাচার্যের উপর শ্রদ্ধাটা আরো অনেক গুণ বেড়ে যাবে। তাছাড়া অন্য কারো মাঝে না হলেও স্বীয় মেয়ের মাঝে তিনি নিজেকে সতেজ রাখার ব্যবস্থাটা আগে থেকেই সেরে ফেলেছেন। সাধক বলে কথা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স- মাস্টার্স শেষ হবার পর সেই ছোট্ট উৎসার বিয়ে হয় চট্টগ্রামে। সুব্রত ভট্টাচার্যের জামাই আবার জ্ঞানে, শিক্ষায়, কথায়, আচরণে ও আদর্শে আর এক সুব্রত ভট্টাচার্য। সবই যেন বিধাতারই লেখা সুনিপুন কোনো অলৌকিক গল্প। চট্টগ্রামের সুপুরুষ তন্ময় চক্রবর্তীর হাতে ২০০৯ সালে একমাত্র কন্যা, মা মরা মেয়ে উৎসাকে অর্পণ করে সুব্রত ভট্টাচার্য যেন স্বর্গীয় সুখ ও অপার শান্তি নিয়ে, আনন্দ জোয়ারে, মুক্ত বিহঙ্গের মতো, ডানা মেলে ভেসে বেড়াচ্ছেন।
"বাবা হিসেবে সার্থক তিনি
শিল্পী হিসেবে খ্যাত ।
সাধক হিসেবে সুনাম যাঁর,
সুশিক্ষকই গূণ শত ।
শ্রেষ্ঠত্বে তিনি সেরা সংগঠক
যাঁর সুন্দর শুধু কার্য
সবাই তাঁকে বলে মহানায়ক
যিনি সুব্রত ভট্টাচার্য ।
রেজাউল করিম রেজা
(লেখাটি চলবে, চোখ রাখুন)
পরবর্তী খবর বৃষ্টি পড়ে টাপুড় টুপুড় নদে এলো বান