আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ১৯শে জুন ২০১৭, সোমবার
| দুপুর ০২:২৬
দেশ
আফিফা মোহসিনা অরণি ।। বর্ষার বন্দনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান-কবিতা-গল্পের ঝুলিতে যেভাবে পাওয়া যায় অন্য কোন কবির লেখায় সেভাবে পাওয়া যায়না। তাইতো রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান আজ এত বছর পরেও আমাদের বর্ষা উপভোগের মাধ্যম। "বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর" থেকে শুরু করে "এসো করো স্নান নবধারা জলে" রবী ঠাকুরের অমর সৃষ্টি।
রবীন্দ্রনাথ নিজে বর্ষাকাল প্রেমী ছিলেন। বর্ষায় তিনি নিজ বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতেন না। দিনভর বৃষ্টি উপভোগ করাই ছিল তার কাজ। বৃষ্টির রুমঝুম আওয়াজ, চকিত বিদ্যুৎ, মেঘের গর্জন, ঠান্ডা হাওয়া আর চোখ জুড়ানো রুপ তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা মুগ্ধ নয়নে দেখতেন। আর এভাবেই তিনি সৃষ্টি করেছেন অনেক গুলো অসাধারণ গান ও কবিতা।
শুধু নাই নয়, রবীন্দ্রনাথের গল্প ও উপন্যাসেও বারবার উঠে এসেছে বর্ষাকাল ও বৃষ্টির কথা। মানুষের ভালোবাসাকেও তিনি বর্ষার সাথে তুলনা করে লিখেছেন অসংখ্য গান ও কবিতা। তেমনি একটি গান হোলো, "মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালো দোলে মন অকারণ হরষে। হৃদয় গগনে সজল ঘন নবীন মেঘে রঙের ধারা বরষে"।
সকাল থেকেই আজ আকাশে মেঘের ঘনঘটা।
একটানা বৃষ্টি হয়েই যাচ্ছে। সেইসাথে রয়েছে আকাশে মেঘের গর্জন। মেঘ কালো আকাশের দিকে তাকালে রবীন্দ্রনাথের গানটি মনে পড়ে যায়, "মেঘ বলেছে যাব যাব"। টানা বৃষ্টিতে থমকে আছে সাধারণ মানুষের কাজ। এমন আবহাওয়ায় শরীরে ভীর করে রাজ্যের আলস্য। তবুও জীবীকার তাগিদ রয়েছে যাদের,তাদের কাজে যেতেই হয়। বর্ষা তাদেরকে কিছুটা অসুবিধায় ফেলেছে বটে, তাই বলে কি কেউ বর্ষা কে ঘৃণা করতে পারে? শুধু মানুষই নয়, সকল পশুপাখি ও গাছপালা গ্রীষ্মের দাবদাহের পর একটুখানি সস্তি পায় এই বর্ষাতেই। ময়ুর তার পাখনা মেলে নেচে ওঠে বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে। যেন বর্ষাকে বরণ করে নেয় সে।
এভাবেই প্রতি বছর ঘুরে ফিরে বর্ষা আসে বাংলার বুকে। বাংলাদেশের আসল রুপ ফুটে ওঠে এই বর্ষাতেই। বৃষ্টির পানি সব কিছু ধুয়ে মুছে বাংলার রুপ করে তোলে আকর্ষণীয়। গাছে গাছে অসংখ্য কদম ফুল ফুটে সেই রুপ কে করে আরো স্নিগ্ধ। এমন বর্ষার দিনে রবী ঠাকুরের মতো করে বলতে ইচ্ছা হয়,
"আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে, জানিনে কিছুতে কেন যে মন লাগেনা"।
আগের খবর বাবার জন্য ভালোবাসা
পরবর্তী খবর সেকালের ঈদ, একালের ঈদ